রৌনক সাহা
বন্ধুদের সঙ্গে নৌকাবিহারে গিয়ে গঙ্গায় নিখোঁজ হয়ে গেলেন এক পডুয়া। সোমবার বিকেলে, কলকাতার পানিঘাটের ঘটনা। খবর পেয়েই তল্লাশি শুরু করেন রিভার ট্র্যাফিক ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। তবে রাত পর্যন্ত রৌনক সাহা (২০) নামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের খোঁজ মেলেনি। তিনি সল্টলেক পূর্বাচলের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, রৌনকের সঙ্গে শ্রদ্ধা দে, স্মিতেন্দু দাস, অনুরাগ রায় ও দেবারতি মজুমদার নামে চার বন্ধু ছিলেন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, মাঝি শেখ সইফুদ্দিন নৌকা ছেড়ে পাশের একটি বার্জে গিয়েছিলেন। তাঁকে খুঁজতে গিয়েই পড়ে যান রৌনক। অভিযোগ, সইফুদ্দিন তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করেননি। সইফুদ্দিনের পাল্টা অভিযোগ, রৌনককে তাঁর বন্ধুরাই ফেলে দিয়েছেন। দু’পক্ষের বক্তব্যই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খবর পেয়ে রৌনকের মা-বাবা দক্ষিণ বন্দর থানায় আসেন। রাত পর্যন্ত তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে পুলিশ জানায়, সইফুদ্দিনকে আটক করে জেরা চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বহরমপুরের বাসিন্দা স্মিতেন্দু এবং বেহালা পর্ণশ্রীর বাসিন্দা অনুরাগ রৌনকের সহপাঠী। দেবারতিও আদতে বহরমপুরের বাসিন্দা। শ্রদ্ধার বাড়ি বিজয়গড়ে। দেবারতি এবং শ্রদ্ধা কলকাতার দু’টি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়েন।
রৌনকের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, বিকেল ৩টে নাগাদ তাঁরা পানিঘাট থেকে এক ঘণ্টার জন্য সইফুদ্দিনের নৌকা ভাড়া করেন। সইফুদ্দিন মাঝগঙ্গায় একটি বার্জের কাছে নিয়ে যান। তার পরে তিনি বার্জে উঠে যান। আধ ঘণ্টা পরে সইফুদ্দিনের খোঁজ শুরু করেন রৌনকেরা। রৌনক বার্জে উঠে মাঝিকে ডাকতে যাচ্ছিলেন। সে সময়ে টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, সইফুদ্দিন বার্জে উঠে মহাবীর চৌধুরী নামে আর এক মাঝির সঙ্গে গল্প করছিলেন। মহাবীর জানিয়েছেন, ওই পাঁচ জন নৌকার ধারে বসেছিলেন। তাতে বিপদ ঘটতে পারে বলে সইফুদ্দিনকে সতর্কও করেছিলেন তিনি। ধাক্কা মারার কথা অবশ্য মহাবীর বলেননি।
রৌনকের বন্ধুদের অভিযোগ, ঘটনার পর সইফুদ্দিন রৌনককে উদ্ধারের চেষ্টা করেননি। উল্টে তাঁদের পানিঘাটে এনে নামিয়ে দেন। ঘাটের অন্য মাঝিদের কাছে সাহায্য চেয়েও মেলেনি। তার পরে পানিঘাটের অদূরে দক্ষিণ বন্দর থানার একটি পুলিশ কিয়স্কে গিয়ে সব জানান রৌনকের বন্ধুরা। সেই খবর পেয়েই তল্লাশি শুরু হয়।
পুলিশ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র রৌনক ভাল ছাত্র হিসেবে পরিচিত। রৌনকের বন্ধুদের অনেকে জানিয়েছেন, এই পাঁচ জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। আগেও তাঁরা দল বেঁধে ঘোরাফেরা করেছেন। যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশের বাদি, তাঁদের মধ্যে গোলমালের কথা শোনা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy