Advertisement
E-Paper

১৭২টি গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি লরিতে আগুন! আতঙ্ক এলাকায়

পুলিশ দ্রুত রাস্তা বন্ধ করে দেয়। যদিও এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত বিপদ এড়ানো গিয়েছে। লরিটির সামনের অংশ সম্পূর্ণ পুড়ে গেলেও গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডারগুলি অক্ষত রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৩৮
ভয়াবহ: জ্বলছে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি লরি। শনিবার, পাটুলিতে।

ভয়াবহ: জ্বলছে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি লরি। শনিবার, পাটুলিতে। নিজস্ব চিত্র।

আশপাশে ঘন জনবসতি। উল্টো দিকেই কলেজ। সব চেয়ে আতঙ্কের বিষয় হল, ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে রয়েছে পেট্রল পাম্প। বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলির এই রাস্তাতেই শনিবার সকালে দাউদাউ করে জ্বলতে দেখা গেল ১৭২টি গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই একটি লরি!

এই ঘটনার জেরে এ দিন সকালে আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসেন স্থানীয়েরা। মুহূর্তে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায় আশপাশে। পুলিশ দ্রুত রাস্তা বন্ধ করে দেয়। যদিও এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত বিপদ এড়ানো গিয়েছে। লরিটির সামনের অংশ সম্পূর্ণ পুড়ে গেলেও গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডারগুলি অক্ষত রয়েছে। তবে অত্যন্ত তাপে সিলিন্ডারগুলির কয়েকটিতে কালচে দাগ পড়ে যায়। কোনও সিলিন্ডার ফেটে গেলে কী বিপদ ঘটতে পারত, তা ভেবেই রাত পর্যন্ত আতঙ্ক কাটছে না স্থানীয়দের।

পুলিশি সূত্রের খবর, এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। সেখানে বাইপাস থেকে পাটুলিগামী রাস্তায় বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ একটি লরিতে আগুন ধরে যায়। জানা যায়, লরিটিতে বোঝাই করা রয়েছে প্রচুর গ্যাস সিলিন্ডার। পুলিশের থেকে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা। এর মধ্যেই প্রমাদ গুনতে থাকেন স্থানীয়েরা। কোনও ভাবে সিলিন্ডার ফাটলে কী হবে, সেই ভেবে বাড়ি ছেড়ে পথে নেমে আসেন তাঁরা। ফাঁকা করিয়ে দেওয়া হয় কলেজ এবংপেট্রল পাম্পও।

এর পরে কোনও মতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। দ্রুত পোড়া গাড়ি থেকে গ্যাস সিলিন্ডারগুলি নামানোর কাজ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক দমকল আধিকারিক বলেন, ‘‘গরম হয়ে থাকা লরি থেকে দ্রুত গ্যাস সিলিন্ডারগুলি নামিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। নয়তো আগুন নিভে যাওয়ার পরেও গরমে বিপদ ঘটতে পারে।’’ সিলিন্ডারগুলি নামানোর পরে দেখা যায়, কয়েকটির গা পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছে। এর পরে শুরু হয় সিলিন্ডারগুলিকে ঠান্ডা করার কাজ। রাস্তার ধারে জলের কলের সামনে শুইয়ে সিলিন্ডারগুলির উপরে জল ঢালা শুরু হয়। রাস্তার পাশে বালি ফেলে, তাতে জল ঢেলে তার উপরে কিছু সিলিন্ডার শুইয়ে রেখে ঠান্ডা করার চেষ্টা হয়। শেষে এক দমকলকর্তা বলেন, ‘‘মোট ১৭২টি সিলিন্ডার ছিল। ফাটতে শুরু করলে উৎসবের মরসুমে শহরে বড় বিপদ ঘটতে পারত।’’

এই ঘটনার পরে গ্যাস সিলিন্ডার ঘিরে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসার সঙ্গে যে সং‌স্থা যুক্ত, তাদের নিজস্ব গুদামঘর রয়েছে। কিন্তু সেখানে নিয়ে না গিয়ে পাটুলির আগে রাস্তাতেই লরি দাঁড় করিয়ে সিলিন্ডার ওঠানো-নামানো হয়। অতীতে এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কাজ হয়নি। এমনকি স্থানীয় কাউন্সিলর স্বরাজকুমার মণ্ডলেরও দাবি, ‘‘অতীতে আমিও প্রতিবাদ করেছি। প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি, কিন্তু লাভ হয়নি। কোনও জাদুবলে ওই সংস্থার সিলিন্ডার নিয়ে এমন বেপরোয়া ব্যবসা বন্ধ করানো যায়নি। প্রশাসনের মদত না থাকলে যা সম্ভব নয়। এর পরেও যাতে এমন ব্যবসা না চালাতে পারে, সেই ব্যবস্থা করব!’’

এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা জানতে ফোন করা হলে স্থানীয় থানা এবং ডিভিশনাল ডিসি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রতিক্রিয়া মেলেনি সংশ্লিষ্ট গ্যাস সংস্থার মালিকপক্ষেরও। তাঁরা জানিয়েছেন, যা বলার পুলিশকে বলবেন। লরিটিতে শর্ট সার্কিট থেকেই এ দিন আগুন লেগেছিল বলে দমকলের দাবি।

Fire Gas Cylinders Patuli
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy