Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

গায়ে আগুন বোনের, বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ দিদিও

গত রবিবার পোস্তার নলিনী শেঠ রোডের ঘটনা। পুলিশ জানায়, সেখানে একটি বাড়িতে বাবা-মা এবং দাদার সঙ্গে থাকেন দুই বোন। তাঁদের দিদির বিয়ে হয়েছে বিহারে। তাঁদের দাদা স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। সেই দাদাকে নিয়েই বাড়িতে বিবাদ চরমে উঠেছিল।

এই ঘরে গায়ে আগুন দিয়েছিলেন তরুণী। নিজস্ব চিত্র

এই ঘরে গায়ে আগুন দিয়েছিলেন তরুণী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫০
Share: Save:

অভিযোগ, বাড়ির ছেলে নেশা করে বোনেদের মারধর করেন। বাবার নির্দেশে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছিলেন পরিবারের বড় মেয়ে। কিন্তু কথাবার্তা চলাকালীন সময়ে বিবাদ এতটাই চরমে ওঠে যে ছোট বোন গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে যান তাঁর মেজো দিদি। আপাতত হাসপাতালে ভর্তি দু’জনেই। কোনও ভাবে রক্ষা পেয়েছে পরিবারের বড় মেয়ের তিন মাসের পুত্রসন্তানটি। সামগ্রিক পরিস্থিতির পরে নিজের ভুল বুঝেছেন দাদাও। ছাড়তে চাইছেন নেশা করার অভ্যাসও।

গত রবিবার পোস্তার নলিনী শেঠ রোডের ঘটনা। পুলিশ জানায়, সেখানে একটি বাড়িতে বাবা-মা এবং দাদার সঙ্গে থাকেন দুই বোন। তাঁদের দিদির বিয়ে হয়েছে বিহারে। তাঁদের দাদা স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন। সেই দাদাকে নিয়েই বাড়িতে বিবাদ চরমে উঠেছিল। প্রতিবেশীরা জানান, ছেলেটি বেশির ভাগ দিনই কাজ কামাই করে নেশা করত। দুই বোন প্রতিবাদ করলে ছেলেটি তাদের মারধর করত বলে অভিযোগ। বাবা-মা কর্মসূত্রে বাইরে থাকায় সম্প্রতি পরিবারের বড় মেয়ে স্বামী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন সেই ঝামেলা মেটাতে।

বড় মেয়ে জানান, সমস্যা মেটাতে গত রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ির একটি ঘরে তাঁরা আলোচনায় বসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিনও ভাই নেশা করে বাড়ি ফেরে। দু’-এক কথা হতে হতেই ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ছোট বোন ঘরে ঢুকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাশেই আমার ছেলে বসেছিল। কোনওমতে বেঁচে গিয়েছে।’’ বাড়ির একতলার বাসিন্দা এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, উপরে গিয়ে তিনি দেখেন, ঘরের মধ্যে জ্বলছেন ওই তরুণী। পাশে কম্বল জড়ানো অবস্থায় পরিবারের মেজো মেয়েও। বাইরে বড় মেয়ের ছোট বাচ্চাটি চিৎকার করে কাঁদছে। ওই প্রতিবেশী বলেন, ‘‘আমরা সবাই মিলে জল দিয়ে, কম্বল চাপা দিয়ে ওই তরুণীর গায়ের আগুন নেভাই।’’ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দুই বোনই এখন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। বুধবার হাসপাতালে খবর নিয়ে জানা যায়, ছোট বোনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছেন। অন্য জনের শরীরের ২০ শতাংশ পুড়েছে। তাঁর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

ওই তরুণীদের মা ফোনে বলেন, ‘‘সামান্য ঝামেলা থেকে এমন হবে ভাবতে পারিনি।’’ যাঁকে ঘিরে গোলমাল বলে অভিযোগ, পরিবারের সেই ছেলের কথায়, ‘‘বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। ওরা সুস্থ হয়ে উঠুক। নেশা করা ছেড়ে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Suicide Posta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE