যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়। —ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন পরীক্ষায় নানা ভাবে প্রশ্নপত্র বেরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস কমিউনিকেশন বিভাগের এক রিসার্চ স্কলার, অতিথি শিক্ষক ও পরীক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রের পরীক্ষার খাতা বাইরে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তার ভিত্তিতে অভ্র সেন নামে ওই রিসার্চ স্কলারকে এই বিষয়ে তদন্ত শেষের আগে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। তাঁরা বিষয়টি পুলিশকেও জানিয়েছেন।
অভিযোগ, জয়দীপ দাস নামে মাস কমিউনিকেশন বিভাগের এক ছাত্রের পরীক্ষার খাতা হোয়াটসঅ্যাপে এক জনকে দিয়ে দেন অভ্র। জয়দীপ শুক্রবার জানান, ওই রিসার্চ স্কলার তাঁদের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন পেপারটি পড়াতেন, খাতাও দেখেছেন তিনি। এ দিন এক অজানা ব্যক্তি তাঁকে একটি ই-মেল এবং সেই সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপের কিছু স্ক্রিন শট পাঠান। তাতে রয়েছে তাঁরই দ্বিতীয় সিমেস্টারের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্র। তিনি এসএফআই-সমর্থক বলেই অভ্র তাঁকে কম নম্বর দিচ্ছেন, এমন মন্তব্যও দেখা যাচ্ছে ওই স্ক্রিন শটে।
ওই বিভাগের পরিকাঠামো নিয়ে এক বছর ধরে আন্দোলন করছে এসএফআই। ওই স্ক্রিন শটে জয়দীপ সম্পর্কে লেখা হয়েছে: ‘কেরিয়ার নিয়ে এত চিন্তা থাকলে ওর এত পাকামি মেরে আন্দোলন করতে আসা উচিত হয়নি’, ‘এগ্জামের মার্কস এমন পাবে, যাতে ওদের নিজেদের গ্রুপে মার্কসের জন্য ভাঙন ধরবে’ ইত্যাদি। যাদবপুর সূত্রের খবর, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি করলেও অভ্র এখন বিজেপির সদস্য। জয়দীপের দাবি, রাজনৈতিক ভাবেই প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন অভ্র।
এসএফআই নিয়ন্ত্রিত আর্টস ফ্যাকাল্টির বিদায়ী স্টুডেন্ট ইউনিয়নের তরফে পুরো বিষয়টির তদন্তের জন্য জানানো হয়েছে উপাচার্যের কাছে। তাদের দাবি, অভ্রকে এখনই বরখাস্ত করতে হবে এবং বিষয়টি পুলিশকেও জানাতে হবে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু সন্ধ্যার দিকে জানান, অভ্রকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি এখন আর কোনও ক্লাস নিতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত করবে। তদন্ত শেষের আগে তিনি ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন না।
মাস কমিউনিকেশন বিভাগের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আছে, তার তদন্তের দাবিতে রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করে কলা বিভাগের এসএফআই। বেশি রাতে ঘেরাও উঠে যায়।
অভ্র বলেন, ‘‘আমি রাজনৈতিক শত্রুতার শিকার। হোয়াটসঅ্যাপের ওই চ্যাট আমার নয়। আমার নামে ‘ফেক আইডি’ বানিয়ে এ-সব করা হয়েছে। আমি পুলিশের কাছে যাচ্ছি।’’ ওই রিসার্চ স্কলার জানান, তিনি চান, আসল সত্য প্রকাশিত হোক।
‘‘যে-অভিযোগ উঠেছে, তা ভয়ঙ্কর। আমরা তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। দোষ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হোক,’’ বলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy