প্রতীকী ছবি।
পুরসভার লরি চালানো ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে দিনমজুরের কাজ করছিল দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত এক চালক। প্রায় ১১ বছর ধরে এ শহরে মজুর হিসেবে কাজ করলেও তার খোঁজ মেলেনি এত দিন। জামিন পেয়ে পালিয়ে বেড়ানো সেই অভিযুক্তকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে লালবাজার।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম মহম্মদ তারা। এক সময়ে কলকাতা পুরসভার লরি চালাত সে। বুধবার চিৎপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের ফেটাল স্কোয়াড। পুলিশ জানিয়েছে, চিৎপুরেই সিমেন্টের বস্তা ওঠানো-নামানোর কাজে যুক্ত ছিল মহম্মদ তারা। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ১১ বছর আগের সেই মামলায় পুলিশ আগেই আদালতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি সকাল আটটা নাগাদ টালা থানা এলাকার টালা ঝিল পার্কে প্রাতর্ভ্রমণে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আরতি সেনগুপ্ত। অভিযোগ, সেই সময়ে পুরসভার একটি লরি পিছোতে গিয়ে পার্কের ভিতরেই তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম ওই মহিলাকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরে সে দিনই লরির চালক মহম্মদ তারাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জেনেশুনে মৃত্যু ঘটানোর উদ্দেশ্যে ধাক্কা মারার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু আদালতে জামিন পেয়েই পালিয়ে যায় সে। পরে অবশ্য তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর ধারা যুক্ত করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারীরা। আদালত পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু মহম্মদ তারাকে আর খুঁজে পায়নি পুলিশ। যে কারণে তদন্তে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মৃতার পরিবার। আদালত সে সময়ে পুলিশকে ভর্ৎসনা করে অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিল। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন টালা পার্ক এলাকার বাসিন্দারাও।
পুলিশ জানায়, জামিনে ছাড়া পেয়ে পুরসভার গাড়ি চালানো ছেড়ে দিয়ে চিৎপুর রেল ইয়ার্ডে সিমেন্টের বস্তা ওঠানো-নামানোর কাজ নিয়েছিল অভিযুক্ত। সেখানে নিজেকে শুধু তারা বলে পরিচয় দিত সে। কিছু দিন আগে পুলিশ জানতে পারে, ১১ বছর আগের সেই পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত ওই এলাকায় রয়েছে। তাকে ধরার জন্য সেখানে শ্রমিক সেজে ঘোরাঘুরি করতে শুরু করে পুলিশ। তাতেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে মহম্মদ তারা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy