E-Paper

জোড়া খুনে ১০ বছর পরে দোষী সাব্যস্ত অভিযুক্ত, আজ সাজা ঘোষণা

আদালত সূত্রের খবর, সঞ্জয় যখন বাজারে মাছ বিক্রি করত, সেই সময়ে তার সঙ্গে প্রাণগোবিন্দের পরিচয়। সঞ্জয়কে একটি রিকশাও কিনে দিয়েছিলেন প্রাণগোবিন্দ। তাঁর বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে সঞ্জয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ০৭:০৬
সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা নামে ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস।

সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা নামে ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। —প্রতীকী চিত্র।

চিৎপুরে জোড়া খুনের একটি ঘটনায় দশ বছর পরে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। মঙ্গলবার সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা নামে ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন শিয়ালদহের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস। বিচারক এ দিন তাঁর এজলাসে সঞ্জয়কে জানান, তাকে ২০১৫ সালে চিৎপুরের ইন্দ্রলোক আবাসনে এক দম্পতিকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করছে আদালত। আজ, বুধবার তার সাজা ঘোষণা হবে। তার আগে সরকারি আইনজীবী ও আসামি পক্ষের মধ্যে সাজা কী হতে পারে, তা নিয়ে সওয়াল- জবাব শুনবেন বিচারক। বিচারক সঞ্জয়কে আরও জানান, সে-ও আজ, বুধবার তার বক্তব্য আদালতে পেশ করতে পারবে।

আদালত সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে চিৎপুরের ওই আবাসনে খুন হন প্রাণগোবিন্দ দাস ও তাঁর স্ত্রী রেণুকা। দু’জনেই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ছিলেন। সেই ঘটনার ৯০ দিনের মাথায় শিয়ালদহ আদালতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী অফিসার জগদ্বন্ধু গড়াই। আদালত সূত্রের খবর, দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয়ের উপরে দম্পতির অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা ছিল। কিন্তু সেই সঞ্জয়ই নৃশংস ভাবে খুন করে দাস দম্পতিকে। একটি লোহার পাইপ দিয়ে দু’জনের মুখ থেঁতলে দিয়েছিল সে। পরে পুকুর থেকে সেই পাইপটি উদ্ধার হয়। নন্দীগ্রাম থেকে সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।

বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি সন্দীপকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল ওই দম্পতিকে। আদালতে সঞ্জয় দোষী প্রমাণিত হয়েছে। ওই দম্পতি অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন তাকে। তাঁদের বিশ্বাসে কুঠারাঘাত করে সঞ্জয়। সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ে তা নিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদেও ফেলেছিলেন এক জন। এখন আদালত সঞ্জয়কে কী সাজা দেয়, সে দিকে আমরা তাকিয়ে আছি।’’

সঞ্জয়কে এ দিন বিচারক জানান, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী এই মামলায় দোষীর সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড, সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন কারাবাস। একই সঙ্গে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাবাস, সর্বনিম্ন ১০ বছরের কারাবাস, সেই সঙ্গে জরিমানা। সরকারি কৌঁসুলি ও আসামি পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে সওয়াল-জবাবের পরে সাজা নির্ধারণ হবে। সঞ্জয়ও তার বক্তব্য পেশের সুযোগ পাবে।

আদালত সূত্রের খবর, সঞ্জয় যখন বাজারে মাছ বিক্রি করত, সেই সময়ে তার সঙ্গে প্রাণগোবিন্দের পরিচয়। সঞ্জয়কে একটি রিকশাও কিনে দিয়েছিলেন প্রাণগোবিন্দ। তাঁর বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে সঞ্জয়। এমনকি, সঞ্জয়ের স্ত্রীকে সাধও খাইয়েছিলেন দাস দম্পতি। পুলিশ জানাচ্ছে, সঞ্জয়ের সঙ্গে ওই দম্পতির মতান্তর শুরু হয়, যখন সে তাঁদের ফ্ল্যাটের একটি ঘরে থাকতে চায়। ওই দম্পতি সঞ্জয়ের এই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তবে, সঞ্জয়ের রিকশাতেই তাঁরা যাতায়াত করতেন। তাই অভিযুক্ত জানত, ওই দম্পতি পেনশন তুলেছেন, বাড়িতে টাকা-গয়না রয়েছে। তাঁদের খুন করার পরে সঞ্জয় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা ও ৫০ ভরি সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chitpur Murder Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy