Advertisement
০৫ অক্টোবর ২০২৩
Fire Crackers

বাজির বর্জ্যে বিপদ কতটা? ভাবনা নেই প্রশাসনের

চলতি বছরে কালীপুজো এবং দীপাবলির পরদিন শহরের নানা এলাকার ছবি সেই প্রশ্নই তুলে দিয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে বাজির খোল, আধ-ফাটা তুবড়ি, ফাটা রকেটের বারুদ, চরকি।

রাস্তায় পড়ে বাজির খোল। বুধবার, মুরারিপুকুরে। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায় পড়ে বাজির খোল। বুধবার, মুরারিপুকুরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ ০৬:১৭
Share: Save:

বাজির দূষণ নিয়ে আলোচনা হয়। শব্দবাজির তাণ্ডব বন্ধে পুলিশি ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনাও হয়। কিন্তু বাজির বর্জ্য নিয়ে কি আদৌ ভাবনাচিন্তা হয়?

চলতি বছরে কালীপুজো এবং দীপাবলির পরদিন শহরের নানা এলাকার ছবি সেই প্রশ্নই তুলে দিয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে বাজির খোল, আধ-ফাটা তুবড়ি, ফাটা রকেটের বারুদ, চরকি। বহু জায়গায় আবার বাজির দাপটে পিচ রাস্তার রং-ই বদলে গিয়েছে! পরিবেশবিদদের বড় অংশের দাবি, বাজির সবই বাজে। বাজি ফাটানো যতটা খারাপ, ততটাই খারাপ ফাটা বাজির খোল যেখানে সেখানে পড়ে থাকা। অথচ, বাজির বর্জ্য নিয়ে কেউ ভাবেনই না।

বাজির খোলে জর্জরিত শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের গলিপথগুলি। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, বহু জায়গা থেকেই পুরসভার সাফাইকর্মীরা এখনও সেগুলি সরিয়ে নিয়ে যাননি। পথচলতি মানুষের পায়ে লেগে সেই সব বাজির বর্জ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে। বাজি ফাটানো কমে গেলেও এখনও বহু এলাকায় ফেরেনি সারমেয়দের দল। এক পশু চিকিৎসকের মতে, ‘‘বাজি ফাটার পরেও খোলে বারুদ থেকে যায়। কুকুরের ইন্দ্রিয় বেশি সজাগ, তাই বারুদের গন্ধ আছে, এমন এলাকায় তারা আসতে চায় না।’’ আর এক পশু চিকিৎসকের দাবি, ‘‘বাজির খোলের রাসায়নিক কুকুরের জন্য খুব খারাপ। সেই গন্ধ পেয়ে অনেক কুকুর বাজির খোল পড়ে থাকা এলাকার আশপাশে আসে না।’’

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মতে, ‘‘বাজির খোলের সব চেয়ে বড় বিপদ জলের সঙ্গে সেগুলি পুরো মেশে না। ওই সব বর্জ্য নিকাশির মুখ বন্ধ করে জল জমার সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজি ফাটানোর পৃথক জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া দরকার।’’ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানালেন, বাজির খোলের বিপদ শুধু সারমেয়দেরই নয়, মানুষেরও। তাঁর কথায়, ‘‘বেশির ভাগ বাজি-বর্জ্য পরিবেশের সঙ্গে মেশে না। ফলে বাজি পোড়ানোর পরে রাস্তায় রাসায়নিকের পড়ে থাকাটা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’’ তাঁর দাবি, বাজি-বর্জ্য পড়ে আছে, এমন এলাকায় বাজার বসলে ঘুরপথে সেই বিষ মানুষের দেহে পৌঁছনোর আশঙ্কা থাকে।

কিন্তু এ নিয়ে কোনও সচেতনতা নেই বলেই দাবি। ফলে কলকাতা পুরসভার তরফে কেউই বলতে পারলেন না এ নিয়ে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের মতে, ‘‘এটা তেমন কোনও ব্যাপার বলে মনে হয় না। সাফাইয়ের সময়েই সব তুলে নেওয়া হয়।’’ কিন্তু দীপাবলির পরের দিনেও তো শহর বাজির বর্জ্যমুক্ত হল না? সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE