Advertisement
০৮ মে ২০২৪

দুর্ঘটনা রুখতে বিশেষ নজর ত্রিফলা স্তম্ভে

কলকাতায় বৃষ্টি হলে জল জমার প্রবণতা অনেক এলাকাতেই রয়েছে। বর্ষণ যদি লাগাতার হয়, তা হলে অনেক রাস্তাই জলে ডুবে থাকে। অন্ধকারে এই সব এলাকায় অনেক সময়েই রাস্তার ধারের বাতিস্তম্ভে বিদ্যুতের সংযোগ থাকলে বিপদের আশঙ্কা বাড়ে।

এমন পরিস্থিতিতেই বাড়ে বিপদের আশঙ্কা। ফাইল চিত্র

এমন পরিস্থিতিতেই বাড়ে বিপদের আশঙ্কা। ফাইল চিত্র

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:০০
Share: Save:

রাস্তার জল জমার সময়ে বাতিস্তম্ভ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগে মারা যাওয়ার অভিযোগ বাড়ছে শহরে। তড়িদাহত হয়ে মৃত্যুর পিছনে ফুটপাথে থাকা ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের কথা উঠছে। কেউ কেউ আবার রাস্তার পাশে থাকা সিইএসসি-র ফিডার বক্সের কথাও বলছেন। কারণ যা-ই হোক, এ বার পুরসভা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বৃষ্টির পরে কোনও রাস্তায় জল জমা থাকলে সেই এলাকার ত্রিফলার আলো নিভিয়ে দেওয়া হবে। জমা জল সরে গেলে ফের তা জ্বালানো হবে। শহরবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানালেন পুরসভার এক পদস্থ কর্তা।

কলকাতায় বৃষ্টি হলে জল জমার প্রবণতা অনেক এলাকাতেই রয়েছে। বর্ষণ যদি লাগাতার হয়, তা হলে অনেক রাস্তাই জলে ডুবে থাকে। অন্ধকারে এই সব এলাকায় অনেক সময়েই রাস্তার ধারের বাতিস্তম্ভে বিদ্যুতের সংযোগ থাকলে বিপদের আশঙ্কা বাড়ে। দে়ড় বছরে এ ভাবে চার জনের মত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসেই মারা গিয়েছেন দু’জন। দু’টিই ঘটেছে আঁধার নামার পরে। গত সপ্তাহে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে পুরসভা। কাঠগোড়ায় সিইএসসি-ও। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ বিষয়ে জানান, গত বছরে মৃত্যুর ঘটনার পরে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের ঢাকনা খোলা থাকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। তার পরে শহরের ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের ঢাকনা সিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এখনও কেউ কেউ তা খুলে সেই বাতিস্তম্ভ থেকে বিদ্যুৎ চুরি করে আলো জ্বালাচ্ছেন। পুরসভা এবং সিইএসসি-কে তা দেখতে বলা হয়েছে। তাঁর নির্দেশেই শুক্রবার পুরভবনে এক বৈঠক হয়।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে পুর কমিশনার খলিল আহমেদ-সহ সিইএসসি এবং পুরসভার পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারেরা হাজির ছিলেন। আপাতত ঠিক হয়েছে, পুরসভার আলো দফতর এবং সিইএসসি আলাদা ভাবে শহরের প্রতিটি বাতিস্তম্ভ ইনস্পেকশন করবে। বাতিস্তম্ভের ঢাকনা খুলে কেউ বিদ্যুৎ চুরি করছে কি না, তা-ও দেখা হবে। প্রতিদিন সেই কাজ চলবে এবং সপ্তাহ শেষে পুরসভার রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে পুর কমিশনারের কাছে।

পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, বর্তমানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাড়ি এবং রাস্তার বিদ্যুৎ সংযোগ একই ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে। অর্থাৎ, রাস্তার আলো নেভালে কোনও কোনও বসতবাড়ির আলোও নিভে যায়। ফলে হঠাৎ যে কোনও সময়ে রাস্তার আলো বন্ধ করা যায় না। বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ উঠতেই সিইএসসি-কে বলা হয়েছে, বাড়ি এবং রাস্তায় বিদ্যুৎ সংযোগ আলাদা করে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে। সিইএসসি-র এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, বৈঠকে ওঠা বিষয়গুলো নিয়ে তাঁরাও নতুন করে ভাবছেন।

বর্তমানে কলকাতায় ত্রিফলা-সহ প্রায় পৌনে তিন লক্ষ বাতিস্তম্ভ রয়েছে। রয়েছে সিইএসসি-র ফিডার বক্সও। জলে ডুবে থাকার সময়ে কোথা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে জীবনহানির ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে চাপান-উতোর রয়েছে। তবে শহরবাসীর নিরাপত্তার বিষয়ে এ বার জোর দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র নিজেই। মাঝেমাঝেই ভারী বর্ষণে সাময়িক ভাবে ডুবে যাচ্ছে রাস্তা, গলি। তাই সন্ধ্যার পরে জল জমে এমন এলাকায় ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ নিভিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানান পুরসভার এক পদস্থ কর্তা। এই ব্যবস্থায় তড়িদাহত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে মনে করছে পুর প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

trident lamps accident Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE