Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

Dengue in Kolkata: পুর পরিদর্শনে মহিম হালদার স্ট্রিটে মিলল এডিসের লার্ভা, অসুস্থ আরও এক কিশোর

মহিম হালদার স্ট্রিটের ৪৬২টি বাড়ি পরীক্ষা করেন পুরকর্মীরা। জানতে পারেন এলাকার আরও এক কিশোরের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার কথা।

নিষ্ফল: স্কুলে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। শুক্রবার, ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে।

নিষ্ফল: স্কুলে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। শুক্রবার, ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩৬
Share: Save:

কালীঘাটের মহিম হালদার স্ট্রিটের বাসিন্দা আরও এক কিশোর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ওই এলাকারই বাসিন্দা, বারো বছরের বিশাখ মুখোপাধ্যায়ের বৃহস্পতিবারই ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই শুক্রবার সেখানে যান কলকাতা পুরসভার পতঙ্গবিদেরা। তখনই জানতে পারেন এলাকার আরও এক কিশোরের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, আপাতত স্থিতিশীল বছর এগারোর ওই কিশোর।

এ দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুরসভার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিম হালদার স্ট্রিটের ৪৬২টি বাড়ি পরীক্ষা করেন পুরকর্মীরা। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘চারটি বাড়িতে ডেঙ্গিবাহী এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা মিলেছে। মোট ৮৩০টি জলের পাত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। সাতটি জলের পাত্রে ডেঙ্গিবাহী মশার লার্ভা ছিল।’’ এ দিনের পরিদর্শনে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ, জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ ছাড়াও ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়। দু’টি বাড়ি তালাবন্ধ থাকার খবর পুরসভা কালীঘাট থানায় জানিয়েছে। মালিককে নোটিস দিয়ে শীঘ্রই তালা খোলা হবে।

এ দিন বিশাখের বাড়ি এবং ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের যে স্কুলে ওই কিশোর পড়ত, সেখানেও গিয়েছিলেন পতঙ্গবিদেরা। কিন্তু ওই দুই জায়গায় মশার লার্ভা মেলেনি বলে দাবি দেবাশিসবাবুর। পুরসভা সূত্রের খবর, মহিম হালদার স্ট্রিটের বাসিন্দা অন্য কিশোর আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।

অন্য দিকে, ফর্টিস হাসপাতালে বিশাখের চিকিৎসার যাবতীয় কাগজপত্র স্বাস্থ্য দফতরে জমা পড়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই কিশোরের প্রথম রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। সেটা কী পরীক্ষা করা হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। ডেঙ্গিতে কিশোরের মৃত্যুর অডিট করা হবে।’’

গত সোমবার যে কেন্দ্র থেকে বিশাখের ডেঙ্গি পরীক্ষা হয়েছিল, সেটির খোঁজ চালাচ্ছে পুরসভা। কারণ, যে কিশোর ডেঙ্গি হেমারেজিক শক সিন্ড্রোম নিয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়, তার প্রথম রিপোর্ট কী ভাবে নেগেটিভ আসে, তা নিয়ে সংশয়ে চিকিৎসক মহলও। পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘ওই প্যাথলজিক্যাল সেন্টার কী ভাবে ডেঙ্গি নন-রিঅ্যাকটিভ বলল? ওই পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়লে আমরা জানতে পারতাম।’’ করোনা শুরুর আগের বছরগুলির মতো ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও রাজ্যে শুরু হয়নি বলেই জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৪ অগস্ট পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ২৩১ জন। ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের এই সময়কালে কলকাতায় সর্বাধিক আক্রান্ত হন ২৫৯ জন। শেষ দুই সপ্তাহে শহরের কিছু অঞ্চলে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

করোনা অতিমারির মধ্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে ডেঙ্গিও। মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের কথায়, ‘‘ডেঙ্গি আক্রান্ত কিছু সংখ্যক পাওয়া যাচ্ছে। অতিমারি পরিস্থিতিতে করোনা ও ডেঙ্গি যে একসঙ্গে হবে না, এটাও কোথাও বলা নেই। একটি হলে, পরবর্তী সময়ে আর একটিও হতে পারে। ভাইরাসজনিত দু’টি রোগ একসঙ্গে হলে রোগীর ঝুঁকি অবশ্যই বেশি।’’

করোনার মতো ডেঙ্গি পরীক্ষার সংখ্যাও কম বলেই অভিমত জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের। তাঁর কথায়, ‘‘দু’টি রোগই আমাদের কাছে পুরনো। হেলাফেলা করলে কী হতে পারে, তা-ও জানা। কয়েক দিন পরে জ্বর কমে যাচ্ছে দেখে অনেকেই পরীক্ষা করাচ্ছেন না। কিন্তু উপযুক্ত সময়ে ঠিক ব্যবস্থা নিলে মৃত্যু আটকানো সম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE