প্রতীকী ছবি।
তেরো বছরের মেয়েকে যৌন নিগ্রহ ও তার বাবা-মাকে মারধরের অভিযোগে জেলে গিয়েছিল বাপ-বেটা। জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা মাস খানেক ধরে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ ও হুমকি দিচ্ছিল বলে কিশোরীর বাবা-মার অভিযোগ। বুধবার সকালে অভিযুক্ত বাবা, তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা কিশোরীর অভিভাবকদের বেদম পিটিয়ে, কিশোরীর মায়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পোড়ানোর চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ দিনই টালিগঞ্জ থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন ওই ছাত্রীর মা। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত শঙ্কর সোনার, তার স্ত্রী রিনা, ছেলে সোনু ও মেয়ে সুইটি পলাতক।
ঘটনাস্থল ১৮ ডি, মনোহর পুকুর রোডের বস্তি। সেখানকার বাসিন্দা এক কিশোরী, যদুবাবু বাজারের কাছে একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা পেশায় ছুতোয়। মা রান্নার কাজ করেন। সূত্রের খবর, গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই ছাত্রী তাদের সামনের ঘরের দরজায় উঁকি মেরে টেলিভিশন দেখছিল। ওই সময় তাদের পড়শি শঙ্কর, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রথমে তার গায়ে থুতু ছেটায় বলে অভিযোগ। ছাত্রীটি আপত্তি করলে শঙ্কর থুতু মোছার অছিলায় তার শ্লীলতাহানি করে ও পরে যৌন নিগ্রহ করে বলে দাবি ছাত্রীর। সে জানায়, ওই সময় তার মা কাজ থেকে ফেরেন এবং নিগ্রহের সাক্ষী থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে অনেকেই সমঝে চলেন শঙ্করকে। তাই সে দিন থানায় অভিযোগ জানাতে সাহস পাননি ছাত্রীর মা।
অভিযোগ, এর পর থেকে শঙ্কর ওই ছাত্রীর মাকে প্রায়ই হুমকি দিত বিষয়টি গোপন রাখার জন্য। দিন সাতেক পরে ফের ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শঙ্কর ও তার ছেলে সোনু, ওই কিশোরীর মায়ের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। এর পরে প্রতিবেশীরাই ২৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রীর মাকে টালিগঞ্জ থানায় নিয়ে গিয়ে শঙ্কর ও সোনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করান। তখন যৌন নিগ্রহের এফআইআর-ও দায়ের হয়। গ্রেফতার হয় দুই অভিযুক্ত। ছাত্রীর মাকে আদালতে নিয়ে গিয়ে মেয়ের যৌন নিগ্রহ ও তাঁকে মারধরের গোপন জবানবন্দিও দেওয়ায় পুলিশ। কিন্তু দু’জনেই জামিনে মুক্ত হন।
ছাত্রীর মায়ের দাবি, জেল খেটে বেরিয়ে উগ্র মূর্তি ধরে তারা। অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিনই ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, যৌন নিগ্রহের মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ ফের ওই দুই পরিবারের মধ্যে বচসা হয় আবর্জনা ফেলা নিয়ে। এর পরেই ওই ছাত্রীর বাড়িতে সপরিবার চড়াও হয় শঙ্কর। ছাত্রীর ঘর ভাঙচুর করা হয়, ঘরে আবর্জনা ঢেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ছাত্রীর বাবা-মাকে বেধড়ক পেটায় রিনা, সোনু ও সুইটি। অভিযোগ, এর পরে ছাত্রীর মায়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। পড়শিরা বাধা দিলে, এলাকা ছেড়ে পালায় শঙ্কর।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা অভিযোগ পেয়েছে। ছাত্রীর বাবার মেডিক্যাল রিপোর্টও মিলেছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy