বিক্ষোভে টিএমসিপি-র এক গোষ্ঠীর ছাত্র-সমর্থকেরা। বুধবার। ছবি: অরুণ লোধ
বিরোধ মেটাতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, বুধবার বেহালা কলেজে ফের গন্ডগোল বাধল টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। কলেজের ভিতরেই মাথা ফাটল এক ছাত্রের। ঝরল রক্ত।
শিক্ষামন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপের পরেও তাঁরই বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন একটি কলেজে গোলমাল না-থামায় চর্চা শুরু হয়েছে শিক্ষা শিবিরে। কলেজের অধ্যক্ষা শর্মিলা মিত্র এ দিন জানান, আপাতত ছাত্র সংসদের কাজকর্ম স্থগিত থাকছে।
গত শনিবার থেকে দফায় দফায় গোলমাল হয় বেহালা কলেজে। এক পক্ষের অভিযোগ, যে-সব পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের কম, তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ছাত্র সংসদের সদস্যদের একাংশ। তার প্রতিবাদকে ঘিরে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শনি-সোমবার গোলমাল হয়। দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, কোনও বহিরাগত যেন কলেজে না-ঢোকে।
বিক্ষুব্ধ পক্ষের বক্তব্য, তারা এ দিন কলেজে ঢুকে দেখে, ইউনিয়ন রুমে কিছু বহিরাগত যুবক বসে আছে। বাদানুবাদ শুরু হয়। এক সময় শুরু হয় হাতাহাতি। পুলিশ ডাকতে হয়। অধ্যক্ষার কাছে অভিযোগ জানায় দু’পক্ষই। শর্মিলাদেবী জানান, কলেজে কোনও বহিরাগত আসেনি। প্রাক্তনী সংসদ কলেজেরই অংশ। প্রাক্তনেরা কলেজে ঢুকলে তাঁদের কখনওই বহিরাগত বলা যেতে পারে না। তবু বিতর্ক থামাতে আপাতত সংসদের কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে ছাত্র সংসদের তরফে কয়েক জন অধ্যক্ষার ঘরের সামনে অবস্থানেও বসেন। অধ্যক্ষা বলেন, ‘‘এখানে কোনও গোষ্ঠী নেই। ৬০% হাজিরা না-থাকলে কাউকেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। এই নিয়েই যত গোলমাল।’’ এ দিন কলেজে যে-পরীক্ষা ছিল, সেটা নির্বিঘ্নেই মিটেছে বলে জানান তিনি।
কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ আসলাম আলি খানের অভিযোগ, যারা কলেজে গুন্ডামি করেছে, তাদের পিছনে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র মদত রয়েছে। ‘‘লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। তাই ওরা এ-সব করছে। এ ছাড়া সংসদে বহিরাগত কেউ ছিল না,’’ বলেন আসলাম।
এবিভিপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুবীর হালদার বলেন, ‘‘শিক্ষা ক্ষেত্রে টাকা তোলার সিন্ডিকেট তৈরি করেছে টিএমসিপি। সেই নোংরামি ঢাকতে এখন আমাদের উপরে দোষ চাপাচ্ছে। গোলমাল নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যে।’’
বিক্ষোভকারীরা জানান, তাঁরা টিএমসিপি-র কর্মী-সমর্থক। ইউনিয়ন রুমে বেশ কয়েক জন বহিরাগত ছিল। টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘টিএমসিপি-র কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ওই কলেজের ইউনিট ভেঙে দেওয়া হবে। তদন্ত চলছে। টিএমসিপি বা অন্য সংগঠন জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy