বিক্ষোভরতদের মধ্যে পুলিশ কর্তারা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
অবশেষে পুলিশের আশ্বাসে যাদবপুর থানার সামনে থেকে অবস্থান-বিক্ষোভ সরিয়ে নিল পড়ুয়ারা। রবিবার বিকেলে পুলিশের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস পান তাঁরা। গত শনিবারের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে এক যৌথ বিবৃতি দেন ডিসি, ওসি এবং এসিসি। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আশা করি ভবিষ্যতে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।” এর পর বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ ঘেরাও উঠিয়ে নেন পড়ুয়ারা।
এ দিন বিকেল পর্যন্ত থানা ঘেরাও নিয়ে নিজেদের অবস্থানেই অনড় ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একাংশ। এক ছাত্রের উপর পুলিশি হামলার অভিযোগে শনিবার রাতে থানা ঘেরাও শুরু হয়েছিল। রবিবার দুপুর গড়ালেও সে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। হামলাকারী পুলিশ আধিকারিককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে— এই দাবি থেকে প্রাথমিক ভাবে সরেননি তাঁরা। গত কালের ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকেই থানার সামনে জড়ো হয়েছেন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। মিটমাটের জন্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের অনুরোধও মানতে রাজি ছিলেন না তাঁরা।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত কাল বিকেলে। যাদবপুর থানা চত্বরে একটি চায়ের দোকানে বসে সে সময় চা খাচ্ছিলেন অভিজিৎ সালুই নামে এক ছাত্র। দোকানের পাশ দিয়ে পুলিশের গাড়ি ঢোকার সময় অভিজিতকে সেখান থেকে সরে যেতে বললে তিনি প্রথমে রাজি হননি বলে অভিযোগ। ছাত্রদের একাংশের দাবি, গাড়ি থেকে নেমে রাজকুমার মণ্ডল নামে যাদবপুর থানার এক সাব-ইন্সপেক্টর অভিজিতকে কটূক্তি করেন। তাঁর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিজিৎ। সামান্য ধাক্কাধাক্কিও হয়। এর জেরে অভিজিতকে আটক করে রাতেই যাদবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে কয়েক জন অফিসার অভিজিতের কাছে ক্ষমা চান বলে জানিয়েছেন ছাত্ররা। বিষয়টি নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেওয়ার পর অভিজিতকে গত রাতেই থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্ত, এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরই থানা ঘেরাও করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের ছাত্রদের একাংশ। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। যদিও ওই সাব-ইন্সপেক্টরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অভিজিতের ‘মিটমাট’ হয়ে গিয়েছে বলে স্বীকার করে নেন থানা ঘেরাওকারীদের একাংশ। তা সত্ত্বেও অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যান তাঁরা।
এ দিন সকাল থেকেই যাদবপুর থানার সামনে ফের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়াদের একাংশ। অন্য দিকে, ওই অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টরের রাজকুমার মণ্ডল এ দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষয়টি মিটমাটের জন্য এ দিন ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। ডিসি এসএসডি সন্তোষ পাণ্ডে অবস্থান সরিয়ে নেওয়ার জন্য ছাত্রদের অনুরোধও করেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু, তাতে কোনও ফল হয়নি। অবশেষে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের লিখিত আশ্বাসে ঘেরাও সরিয়ে নেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy