Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাধ্য হয়েই বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাস

বাইরে থেকে দেখলে বাড়িটির দোতলার একাংশকে ‘ভুতুড়ে’ বাড়ি বলেও মনে হতে পারে। কালীঘাটের ৮বি সর্দার শঙ্কর রোডের এই বাড়িটিতে কলকাতা পুরসভার তরফে বিপজ্জনক নোটিস ঝোলানো হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই।

জীর্ণ: শিয়রে বিপদ নিয়েই চলছে বসবাস। কালীঘাটে। নিজস্ব চিত্র

জীর্ণ: শিয়রে বিপদ নিয়েই চলছে বসবাস। কালীঘাটে। নিজস্ব চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০০:২০
Share: Save:

বাড়ির দেওয়ালে জুড়ে বড় বড় গাছ গজিয়ে উঠেছে। ছাদের কার্নিশেও গাছ গজিয়েছে। সেই সব গাছের শিকড় বাড়ির জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। বাইরে থেকে দেখলে বাড়িটির দোতলার একাংশকে ‘ভুতুড়ে’ বাড়ি বলেও মনে হতে পারে। কালীঘাটের ৮বি সর্দার শঙ্কর রোডের এই বাড়িটিতে কলকাতা পুরসভার তরফে বিপজ্জনক নোটিস ঝোলানো হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। তা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করে চলেছেন বেশ কয়েকটি পরিবার। চলছে ব্যবসাও।

কিছু দিন আগেই ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে এমনই একটি বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানেও বিপজ্জনক বাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নেয় বসবাস চলছিল। এ নিয়ে পুরসভার তরফে প্রচার চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি ৮বি সর্দার শঙ্কর রোডের এই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, নীচের তলায় কয়েক ঘর ভাড়াটিয়া রয়েছেন। রয়েছে দু’টি দোকানও। একটি গয়নার দোকান। অন্যটি ইলেকট্রনিক্সের দোকান। বিপজ্জনক বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও কেন এখানে থাকছেন? জিজ্ঞাসা করতেই এক ভাড়াটিয়ার জবাব, ‘‘আমার বাপ-ঠাকুর্দার হাত ধরে এই ব্যবসা চলছে। বিকল্প কোনও পেশা নেই। কী করব? বাধ্য হয়েই রয়েছি।’’

বাড়িটির দোতলায় থাকেন মালিক গোপাল দাস। গোপালবাবুর পুত্র শুভঙ্কর দাসের কথায়, ‘‘বাড়িটি শীঘ্রই ভাঙা হবে। প্রোমোটারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।’’ শুভঙ্করবাবু জানান, বাড়িটি থেকে ইতিমধ্যেই দু’জন ভাড়াটে চলে গিয়েছেন। যাঁরা রয়েছেন তাঁদেরও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

দক্ষিণ কলকাতার সর্দার শঙ্কর রোডের এই দোতলা বিপজ্জনক বাড়িটি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন প্রতিবেশীরাও। এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘বাড়িটির পাশ দিয়ে যাওয়া-আসা করতেই ভয় হয়। মনে হয়, এই বুঝি বাড়ি ভেঙে পড়ল।’’ ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকেই ‘টনক’ নড়েছে সর্দার শঙ্কর রোডের বিপজ্জনক বাড়ির মালিকপক্ষের। শুভঙ্করবাবুর কথায়, ‘‘ওই দুর্ঘটনার খবর শোনার পরে রাতে ঘুম হচ্ছে না। কেমন একটা আতঙ্ক গ্রাস করে নিয়েছে। বাড়িটি ভেঙে যাতে দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করা যায় সে বিষয়ে প্রোমোটারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।’’ তিনি আরও জানান, পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন করে সংস্কারের বিষয়ে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE