সেমিনার আয়োজনের নাম করে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে একটি সংস্থার নামে। তার ঠিকানা সল্টলেকের একটি আবাসন। সেই তদন্তে নেমে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই সংস্থার ওয়েবসাইট তো ভুয়ো বটেই, ঠিকানাটিও ভুয়ো। সেখানে কোনও সংস্থার অস্তিত্বই নেই।
বৃহস্পতিবার ওই ঠিকানায় গিয়ে দেখা গেল, চারতলার ফ্ল্যাটের বারান্দায় ঝুলছে শাড়ি, গামছা। বাড়িতে দুপুরে কেউ ছিলেন না। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানালেন, ওই ফ্ল্যাটে কয়েক জন মহিলা ভাড়ায় থাকেন। ফ্ল্যাটের মালিক জানান, গত দু’বছর ধরে একটি নামী বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিতে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছেন। ওই সংস্থার কয়েক জন মহিলাকর্মী ফ্ল্যাটে থাকছেন। তদন্তকারীদের একাংশ বলছেন, কোনও ভাবে ওই ঠিকানাটি জানতে পেরেছিল প্রতারণা চক্রের চাঁইরা। বাইরে থেকে লোকজন এসে সল্টলেকে যাচাই করবে না, এই ভাবনা থেকেই ওই আবাসনের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে।
ওই আবাসন সমিতির কর্তা অশেষ মুখোপাধ্যায় জানান, সেখানে অফিস হিসেবে ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া যায় না। এমন কোনও অনুমতিও সমিতি দেয়নি। তবে পেয়িং গেস্ট অথবা ভাড়ায় কেউ থাকতে পারেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, দক্ষিণ কোরিয়ার এক পরিবেশবিজ্ঞানী ইন্টারনেটে দেখেছিলেন ব্যাঙ্ককে আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। তাতে গবেষণাপত্র পেশ করার জন্য ৪০০ ডলার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করান। নির্ধারিত দিনে ব্যাঙ্ককে পৌঁছে দেখেন, পুরো জিনিসটাই ভাঁওতা। তার পর থেকে কোনও টাকা ফেরত পাননি তিনি। গোটা ঘটনাটি সোলে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে জানান ওই বিজ্ঞানী। দূতাবাস থেকে অভিযোগপত্রটি লালবাজারে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের দফতরে পাঠানো হয়। সিপির নির্দেশে সাইবার থানা তদন্তে নামলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোনও গ্রেফতারির খবর নেই।
বৃহস্পতিবারও ওই ওয়েবসাইটটি চালু ছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, ব্রিসবেন, এথেন্স, বালি এমনকী, ব্যাঙ্ককেও পরবর্তী আলোচনাচক্রের ঘোষণা রয়েছে। কুয়ালালামপুরে সংস্থার শাখা অফিস রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও চালু রয়েছে। এর আগে কোথায় কোথায় সেমিনার হয়েছে তার ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপনও রয়েছে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই ওয়েবসাইট চালু থাকলে আরও অনেকেই ফাঁদে পড়তে পারেন।