Advertisement
E-Paper

যুবভারতীতে গচ্চা যাওয়া অর্থ দর্শকদের ফেরত দেওয়াই এখন অগ্রাধিকার নবান্নের! পদ্ধতি খতিয়ে দেখে জারি হবে নির্দেশ

এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে অভ্যস্ত ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলির মতে, দর্শকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি যে তৈরি হতে পারে, সে কথা মাথায় রেখেই এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ফলে তার পন্থাপদ্ধতিও আয়োজকদের জানাই থাকে। কাজটা তেমন কঠিন নয়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:৫১
WB administration considering provisions of refunding money to audience of Messi Event at Yuva Bharati

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মোট ৭০ মিনিটের প্রস্তাবিত অনুষ্ঠানে দাঁড়ি পড়ে গিয়েছিল ২২ মিনিটেই। যাঁকে দেখতে হাজার হাজার টাকার টিকিট কেটে মাঠে যাওয়া, অবাঞ্ছিত জমায়েতের কারণে সেই লিয়োনেল মেসিকে প্রায় দেখতেই পাওয়া যায়নি। পয়সা উসুল না-হওয়ার মাশুল দিয়েছে শনিবারের যুবভারতী। মাশুল দিচ্ছেন অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্তও। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছে আপাতত অগ্রাধিকার ‘মাশুল সমীকরণ’। যে টিকিট জলে গিয়েছে, তার জন্য গচ্চা যাওয়া টাকা দর্শকদের ফিরিয়ে দেওয়াই এখন নবান্নের কাছে অগ্রাধিকারের তালিকায় এক নম্বরে। রাজ্যের এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘টাকা ফেরাতেই হবে। এর অন্য কোনও বিকল্প নেই।’’

কী ভাবে সেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা শুরু করেছে নবান্ন। রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া খুব একটা জটিল নয়। তবে পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে সেই পদ্ধতি এখনও শুরু করা যায়নি। সেই দিকগুলিই আপাতত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে অভ্যস্ত ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলির মতে, দর্শকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি যে তৈরি হতে পারে, সে কথা মাথায় রেখেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ফলে তার পন্থাপদ্ধতিও আয়োজকদের জানাই থাকে। কাজটা তেমন কঠিন নয়। সাধারণত টাকা ফেরানোর জন্য ৯০ দিনের (প্রস্তাবিত শোয়ের দিন থেকে) একটি সময়সীমা থাকে। কিন্তু অত দিনও লাগে না। শহরের এক নামকরা ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা সংস্থার কর্ণধারের কথায়, ‘‘খুব বেশি হলে সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া যায়। এটা খুব একটা বড় বিষয় নয়। সারা পৃথিবী জুড়ে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। ভবিষ্যতেও ঘটবে। ফলে এই পদ্ধতি সরল হতেই হবে।’’

যুবভারতীতে মেসির অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল খাবার ডেলিভারির অ্যাপ হিসাবে পরিচিতি পাওয়া ‘জ়োম্যাটো’-র মাধ্যমে। ফলে টিকিটের অর্থ ওই সংস্থার কাছেই আপাতত গচ্ছিত রয়েছে। রাজ্য প্রশাসন ‘জ়োম্যাটো’-কে টিকিটের টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিলে সেই প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে।

‘জ়োম্যাটো’ অবশ্য পুরো টাকা ফেরত দেবে না। ইভেন্ট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত লোকজন জানাচ্ছেন, ওই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে জিএসটি, ‘জ়োম্যাটো’র নিজস্ব ‘ফি’ (টিকিট বিক্রির দায়িত্ব নেওয়ার বিনিময়ে যে পারিশ্রমিক ওই সংস্থার প্রাপ্য) এবং এই ধরনের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যে ৪ থেকে ৬ শতাংশ কর নেওয়া হয় (যার কথা সমস্ত অনুষ্ঠানের টিকিটেই সাধারণত লেখা থাকে। বলা থাকে, অনুষ্ঠান না হলেও ওই পরিমাণ অর্থ ফেরতযোগ্য নয়), সেই পরিমাণ অর্থ কেটে নিয়ে। বাকি টাকা আয়োজক শতদ্রুর সংস্থাকে ফিরিয়ে দেবে ‘জ়োম্যাটো’। শতদ্রুর সংস্থা এর পরে সেই টাকা দর্শকদের ফেরত দেবে।

কত জনকে টাকা ফেরাতে হতে পারে, সে হিসাবও রাজ্য প্রশাসনের কাছে রয়েছে। শনিবারের অনুষ্ঠানে যুবভারতীর গ্যালারির জন্য ৪৮ হাজারের মতো টিকিট ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যে ১৪ হাজার ছিল সৌজন্যমূলক (কমপ্লিমেন্টারি) টিকিট। তার জন্য কোনও পয়সা নেওয়া হয়নি। বাকি ৩৪ হাজার টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল। সেই ৩৪ হাজার দর্শক চাইলে টাকা ফেরত নিতে পারবেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে।

তবে যুবভারতীতে মেসি-সফরের টিকিটের টাকা ফেরানোর পদ্ধতি জটিল না হলেও প্রক্রিয়াগত একটি সমস্যা রয়ে গিয়েছে। শতদ্রুর সংস্থায় তিনি নিজেই যে হেতু সর্বেসর্বা, সে হেতু তাঁকে ছাড়া ওই প্রক্রিয়া চালু করা সম্ভব নয়। তিনি ছাড়া অন্য কেউ তাঁর সংস্থার হয়ে অর্থনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী কি না, কে সই করবেন, কে টাকা ফেরানোর আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেবেন, সে সব বিষয় এখনও স্পষ্ট নয়। শতদ্রু পুলিশ হেফাজতে থাকায় তাঁকে দিয়ে দ্রুত এই সব কাজ করিয়ে নেওয়া সম্ভব কি না, সে ক্ষেত্রে আইনি সংস্থান কেমন রয়েছে, সে সব বিষয় নবান্নের তরফে আপাতত খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি। প্রক্রিয়াগত সেই পারিপার্শ্বিক দিকগুলি স্পষ্ট হলে রাজ্য প্রশাসনের তরফে ‘জ়োম্যাটো’-কে বার্তা দেওয়া হবে বলেই রাজ্যের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy