Advertisement
E-Paper

পাসওয়ার্ডে শুধু ‘০’, কোন শূন্যতায় এমন হিংস্র অমিত, উত্তরের খোঁজে পুলিশ

এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘কয়েক বার নম্বর লক খোলার চেষ্টায় ব্যর্থ হই আমরা। তার পর খানিকটা আন্দাজেই চারটি শূন্য দিয়ে চেষ্টা করি। আর তাতেই কেল্লাফতে।’’

অমিত আগরওয়াল। —ফাইল চিত্র।

অমিত আগরওয়াল। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ১৯:৪১
Share
Save

চারটি শূন্য। স্ত্রী,শাশুড়িকে খুন করার আগে শূন্যই ছিল অমিতের মোবাইলের পাসওয়ার্ড। আর সেই মোবাইল খুলে ৬৭ পাতার সুইসাইড নোটের মতোই মিলল আরও অনেক তথ্য যার পরতে পরতে রয়েছে জিঘাংসা এবং আক্রোশের ছাপ।

সোমবার তদন্তকারীরা সন্ধ্যায় সুভাষ ঢনঢনিয়ার ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন একটি বিছানার উপর চিৎ হয়ে পড়ে আছেন রক্তাক্ত অমিত। পাশেই তাঁর মোবাইল। প্রথমে সেই মোবাইলকে হাতিয়ার করেই তদন্ত এগনোর চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘কয়েক বার নম্বর লক খোলার চেষ্টায় ব্যর্থ হই আমরা। তার পর খানিকটা আন্দাজেই চারটি শূন্য দিয়ে চেষ্টা করি। আর তাতেই কেল্লাফতে।’’ সেই মোবাইল খুলে তদন্তকারীরা পেয়েছেন আরও অনেক তথ্য। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়েছিল যে, তিনি স্ত্রী শিল্পীর সঙ্গে ফোনের সমস্ত কথাবার্তা রেকর্ড করে রাখতেন। হদিশ মিলেছে বেশ কিছু ই-মেলের। বন্ধু এবং আত্মীয়দের ই-মেল করে জানাতেন স্ত্রী-র বিষয়ে। নিজের অবসাদের বিষয়ে। এমনকি, আত্মহত্যা করার আগেও ই-মেল করেছিলেন তিন জনকে— এমনটাই এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ছেলেকে কাছে না-পেয়েই কি খুন স্ত্রী এবং শাশুড়িকে​

আরও পড়ুন: গভীর রাতে রেড রোডে অর্ধনগ্ন যুবতী, উদ্ধার করতে হিমশিম পুলিশ​

একই সঙ্গে পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়ার অন্য একটি ফ্ল্যাটেই লুকিয়ে রাখা ছিল পিস্তল। সোমবার বিমানবন্দর থেকে সোজা সেই ফ্ল্যাটে যান অমিত আগরওয়াল। সেখানে মিনিট ১৫ কাটিয়ে পিস্তল একটি ল্যাপটপ ব্যাগে ভরে রামকৃষ্ণ সমাধি রোডে শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়ার ফ্ল্যাটে পৌঁছন অমিত। ফুলবাগানের জোড়া খুন এবং আত্মহত্যার ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই মনে করছে পুলিশ। স্ত্রী-শাশুড়িকে খুন করে আত্মহত্যার ঘটনায় ব্যাবহার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রর উৎস খুঁজতে গিয়েই সুভাষ ঢনঢনিয়ার মানিকতলা মেন রোডের ফ্ল্যাটের হদিশ পান তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের দাবি, অমিতের বিমান কলকাতায় পৌঁছয় বিকাল চারটে নাগাদ। তার পর থেকে তাঁর গতিবিধির খোঁজ করতে গিয়েই মেলে অন্তর্দেশীয় টার্মিনালের বাইরে প্রি পেইড ট্যাক্সি বুথ থেকে তিনি ক্যাব বুক করছেন। সেই অনুযায়ী খোঁজ করে ক্যাব সংস্থার কাছ থেকে জানা যায়, বেঙ্গল কেমিক্যাল বাস স্টপেজের কাছে সরকারি বাসের ডিপোর সামনে নেমে যান অমিত। বিমানবন্দরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা যায় তাঁর হাতে একটি ফোলিও। অথচ রামকৃষ্ণ সমাধি রোডে শ্বশুরবাড়ির ফ্ল্যাটে ঘটনার রাতে পাওয়া গিয়েছিল একটি ল্যাপটপের ব্যাগ। সেই ব্যাগে ল্যাপটপ ছাড়া ছিল গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন। ৬৭ পাতার ‘মহাভারত অব মাই লাইফ’ শীর্ষক তাঁর সুইসাইড নোট এবং একটি পাঁচ পাতার সংক্ষিপ্তসার গোটা লেখার।

সেখান থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা হয়, বিমানবন্দর থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে তিনি পিস্তল ভরা ল্যাপটপ ব্যাগ সংগ্রহ করেন। এই নিয়ে তদন্ত করতে গিয়েই সুভাষ ঢনঢনিয়ার কাছ থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ৭ বছর আগে মানিকতলা মেন রোডে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন তিনি। সেখানে সাময়িক ভাবে বসবাস করতেন অমিত এবং তাঁর মেয়ে শিল্পী। জানা যায় সেই ফ্ল্যাটের চাবিও ছিল অমিতের কাছে।

সুভাষ ঢনঢনিয়ার রামকৃষ্ণ সমাধি রোডের ফ্ল্যাট থেকে সেই ফ্ল্যাটের দূরত্ব ৫০০ মিটারের বেশি নয়। অন্য দিকে যেখানে অমিত ট্যাক্সি থেকে নেমেছিলেন, সেই জায়গা থেকেও মানিকতলা মেন রোডের ফ্ল্যাটের দূরত্ব হাঁটাপথের। এই দুই মিলিয়েই সু‌ভাষ ঢনঢনিয়ার ফ্ল্যাটে এ দিন যান তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের দাবি, আগে থেকেই ওই ফ্ল্যাটে পিস্তল লুকিয়ে রেখেছিলেন অমিত। কারণ দীর্ঘ দিন ধরেই শ্বশুরবাড়ির সবাইকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। তাই বিমানবন্দর থেকে সোজা সেখানে গিয়ে পিস্তল সংগ্রহ করে শ্বশুরবাড়ি যান তিনি। তদন্তকারীরা এখনও নিশ্চিত নন কোথা থেকে এবং কবে ওই বেআইনি পিস্তলটি তিনি জোগাড় করেছিলেন। তবে অমিতের বিভিন্ন হোয়াটস্‌অ্যাপ মেসেজ এবং ই-মেল থেকে পাওয়া তথ্য ঘেঁটে তদন্তরকারীদের অনুমান, লকডাউনের আগেই মার্চ মাসে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রটি জোগাড় করেন অমিত। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, স্থানীয় কোনও দুষ্কৃতীর মাধ্যমে জোগাড় হয়েছিল পিস্তলটি।

Crime Suicide Murder Chartered Accountant Phoolbagan Police

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।