Advertisement
E-Paper

জন্মদিনের বাড়িতে আগুন, জখম প্রৌঢ়া

বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়ায়। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৯
ভস্মীভূত: এ ভাবেই পুড়ে গিয়েছে ঘর। বুধবার, বরাহনগরে। —নিজস্ব চিত্র।

ভস্মীভূত: এ ভাবেই পুড়ে গিয়েছে ঘর। বুধবার, বরাহনগরে। —নিজস্ব চিত্র।

সকাল থেকেই বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের ভিড়। জন্মদিনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে চলছিল সকালের জলখাবার তৈরির তোড়জোড়। তখনই বিদ্যুতের সংযোগ বাক্সে আগুনের ঝলকানি দেখে তড়িঘড়ি জল ঢেলে নেভানোর চেষ্টাও করছিলেন বাড়ির লোকজন। কিন্তু আগুন মুহূর্তের মধ্যে টালির চালের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি সকলে বেরিয়ে এলেও পুড়ে জখম হলেন এক প্রৌঢ়া।

বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়ায়। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। তবে বাড়িটির তিনটি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, তাঁতিপাড়ার রাজকুমার মুখার্জি রোডে বরাহনগর জুট মিলের প্রাক্তন কর্মী অশোক দাসের বাড়িতে তাঁর নাতির জন্মদিন উপলক্ষে এসেছিলেন পরিজনেরা। সকাল ৯টা নাগাদ আচমকাই বাড়ির বারান্দায় থাকা বিদ্যুতের একটি সংযোগ বাক্স থেকে আগুনের ফুলকি বেরোতে দেখা যায়। খবর দেওয়া হয় ইলেকট্রিক মিস্ত্রিকে। তবে তিনি আসার আগেই আগুন ধরে যায় ছাউনির বাঁশের কাঠামোতে। আগুন বাড়তে দেখে বাড়িতে উপস্থিত লোকজন জল ঢেলে তা নেভানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। বরং আগুন বারান্দা থেকে পরপর তিনটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে।

সারা বাড়ি কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। চেঁচামেচিতে জড়ো হয়ে যান এলাকার অন্য বাসিন্দারাও। কোনও মতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন সব লোকজন। কিন্তু আগুনের হলকা লেগে অশোকবাবুর স্ত্রী বেবীদেবীর চুলে আগুন ধরে যায়। কোনও মতে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। এর পরে তাঁকে বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান দমকল কর্মীরা। পরে দমকল কর্মী ও স্থানীয়েরা খুঁজে দেখেন ধ্বংসস্তূপের নীচে কেউ আটকে রয়েছেন কি না।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আলমারি, খাট, ফ্রিজ-সহ সব আসবাবপত্রই পুড়ে গিয়েছে। প্রতিটি ঘরের টালির ছাউনি পুড়ে গিয়েছে। উপহারের আংটি, হার-সহ নগদ টাকাও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বারান্দায় মজুত করা চাল, আনাজও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এক পাশে পড়ে তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার। দমকল কর্মীরা জানান, সিলিন্ডারগুলিতে আগুন না লাগায় বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। ওই ঘিঞ্জি এলাকায় সিলিন্ডার ফাটলে হলে মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশের বাড়িতে ছড়িয়ে যেত বলেই আশঙ্কা দমকল, পুলিশ ও স্থানীয়দের। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কাউন্সিলর গীতারানি গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। কারও প্রাণহানি হয়নি, এটাই সব থেকে বড় ব্যাপার।’’

অনুষ্ঠানের জন্য কাছেই একটি ভবন ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। অগ্নিকাণ্ডের পরে আত্মীয়স্বজন থেকে বাড়ির লোকজন সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন। ঘটনার সময় অশোকবাবুর ছেলে পাপ্পুবাবু বাজারে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ খবর পেলাম বাড়িতে আগুন লেগেছ। কী ভাবে হল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করছিলেন অশোকবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘নাতির জন্মদিনটা পুরো বানচাল হয়ে গেল। কত আনন্দ হত। সব শেষ হয়ে গেল।’’

Baranagar Fire বরাহনগর আগুন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy