Advertisement
E-Paper

ভুগছিলেন অবসাদে, বেহালায় ‘আত্মঘাতী’ ইঞ্জিনিয়ার

স্ত্রী, কন্যা ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বেহালার সেনহাটি কলোনিতে থাকতেন পূষন। তাঁর বাবা বছরখানেক আগে মারা গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৩
পূষন দাশগুপ্ত

পূষন দাশগুপ্ত

বুধবার জার্মানি যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এ দিন সকালেই বেহালায় নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেল তাঁর দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পূষন দাশগুপ্ত (৪৬)। পুলিশের ধারণা, একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ওই ইঞ্জিনিয়ার আত্মঘাতী হয়েছেন। মিলেছে সুইসাইড নোটও।

স্ত্রী, কন্যা ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বেহালার সেনহাটি কলোনিতে থাকতেন পূষন। তাঁর বাবা বছরখানেক আগে মারা গিয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পূষন গত ১২ বছর ধরে সল্টলেকের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। প্রায়ই বিদেশে যেতে হত তাঁকে। বুধবারও জার্মানি যাওয়ার কথা ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বা়ড়ির দোতলার একটি ঘরে স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন পূষন। তাঁর স্ত্রী, পেশায় কলেজশিক্ষিকা সৌবর্ণা পালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ ঘুম ভাঙতে তিনি দেখেন, ঘরের দরজায় বাইরে থেকে ছিটকিনি দেওয়া। তিনি ডাকাডাকি করায় পাশের ঘরে থাকা বৃদ্ধা শাশুড়ি দরজা খোলেন। এর পরে নীচের তলার একটি ঘরের দরজা ঠেলতেই দেখা যায়, গলায় কাপড় বাঁধা পূষনের দেহ সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে। স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। বেহালা থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ওই ইঞ্জিনিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পূষন ছেলেবেলা থেকেই ভাল ছাত্র ছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরে নাগপুর থেকে ই়ঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। বছর বারো আগে যোগ দিয়েছিলেন সল্টলেকের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়। সৌবর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, পূষন গত কয়েক দিন ধরে তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। যে কারণে এ দিনই স্বামীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর।

কর্মসূত্রে পূষনকে বারবারই বিদেশে যেতে হত। কিন্তু ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছিলেন, বিদেশে যেতে আর ভাল লাগে না তাঁর। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দিন কয়েক আগে পূষন তাঁর অফিসে ভিসা সংক্রান্ত যে কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাতে বেশ কিছু গরমিল পাওয়া গিয়েছিল। যা নিয়ে অফিসে তদন্তও শুরু হয়েছিল। সেই ঘটনার জেরে পূষন আতঙ্কে ছিলেন বলেও জেনেছে পুলিশ। সম্মানহানির ভয় চেপে বসেছিল তাঁর মধ্যে। তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা, মানসিক অবসাদও সম্ভবত সেই কারণে।

মৃতের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা ছিল: ‘ভাল স্বামী হতে পারলাম না। ভাল বাবাও হতে পারলাম না।’ প্রতিবেশীরা অনেকেই জানিয়েছেন, পূষনের এই মৃত্যুতে তাঁরা বিস্মিত। কারণ মিশুকে স্বভাবের ওই যুবকের মধ্যে কখনওই আত্মহত্যার কোনও প্রবণতা দেখেননি তাঁরা। বেহালা থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। মৃতদেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারব আমরা।’’

Behala Depression Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy