মাদক সেবনে ক্ষতি— এত দিন পুস্তিকায়, লিফলেটে, পোস্টারে সে দিকেই জোর দেওয়া হত। কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের ডেকে এ বার পোস্টারে শাস্তির মেয়াদও লিখে দিতে বলা হল। যাতে তা দেখতে পেয়ে অন্তত কিছুটা হলেও ভয় পান পড়ুয়ারা। কারণ, এখন শুধু মাদক সেবনেই সীমাবদ্ধ নেই তাঁরা, মাদক কেনাবেচাও শুরু করে দিয়েছেন।
গত তিন দিন ধরে মাদক চোরাচালানে অভিযুক্ত ধৃত পাঁচ জনকে জেরা করে প্রচুর কলেজ ছাত্রছাত্রীর নাম পেয়েছে নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। অভিযোগ, খিদিরপুর, সল্টলেক, নিউ টাউনে ছড়িয়ে থাকা পাঁচটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজের সেই সব ছাত্রছাত্রীর অনেকেই নিয়মিত মাদক বিক্রি করছেন। এমন ছ’জন পড়ুয়াকে রাজারহাটের অফিসে তুলে এনে মাদক সেবন ও বিক্রি করলে ভবিষ্যতে কী ক্ষতি হতে পারে, তা বুঝিয়েছেন এনসিবি অফিসারেরা।
যে পাঁচটি কলেজের নাম উঠে এসেছে, বৃহস্পতিবার সেই কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের অফিসে ডেকে বৈঠক করেন এনসিবি-র পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব। পরে তিনি বলেন, ‘‘এই সব কলেজে পোস্টার লাগাতে বলা হয়েছে। সেখানে শাস্তির মেয়াদও বলে দেওয়া হবে।’’ জানা গিয়েছে, চরস, গাঁজা, এলএসডি, হেরোইন, কোকেন ও এমডিএমএ ক্যান্ডি— এক এক ধরনের মাদক-সহ ধরা পড়লে তার শাস্তির মেয়াদ আলাদা আলাদা হয়। সঙ্গে কতটা মাদক রয়েছে, তার উপরেও শাস্তির মেয়াদ নির্ভর করে। এনসিবি সূত্রের খবর, নার্কোটিক ড্রাগ অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবসট্যান্সেস (এনডিপিএস) আইনে এক বছর থেকে কুড়ি বছর পর্যন্ত শাস্তির কথা বলা আছে।
দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘এই শাস্তির মেয়াদের কথা অনেকেই জানেন না। এমনকী মাদক দেখতে কেমন হয়, তা-ও জানেন না কলেজের প্রতিনিধিরা। আমরা সেই সব মাদকের ছবি দেখিয়েছি। ক্যাম্পাসে কী ভাবে মাদক কেনাবেচা চলছে, সে বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে।’’ এই সব কলেজে জানুয়ারি মাস থেকে লাগাতার প্রচারের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি। আজ, শুক্রবার হলদিয়ার একটি কলেজে এই প্রচারে যোগ দিতে দিলীপবাবু নিজে যাবেন। এনসিবি সূত্রের খবর, এ দিনই আরও বিশদ পরীক্ষার জন্য ধৃতদের মোবাইল ও ল্যাপটপ কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।