E-Paper

চা বাগানের সংগ্রামের কথা শোনাল কমিশনের শিশু ‘চেয়ারপার্সন’

বুধবার আন্তর্জাতিক পাচার-বিরোধী দিবস উপলক্ষে রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের এক দিনের শিশু চেয়ারপার্সন হিসাবে নিযুক্ত হয়ে নাগরাকাটার ঘাটিয়া চা বাগানের বাসিন্দা ঋষিকা তুলে ধরেছে চা বাগানের শিশুদের সমস্যার কথা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৫ ০৭:১৮
রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাসের সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) শশীকান্ত গোয়ালা, খুশবু মুন্ডা ও ঋষিকা শবর।

রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাসের সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) শশীকান্ত গোয়ালা, খুশবু মুন্ডা ও ঋষিকা শবর। —নিজস্ব চিত্র।

চা বাগানের শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে স্কুলছুট, নেশা করা, বাড়ি থেকে পালানোর প্রবণতা। তবে, পালানোর পরে তারা ফিরে এলেও বাবা-মা যেন বার বার তাদের ভুলটা মনে করিয়ে না দেন— জলপাইগুড়ির চা বাগান থেকে শহরে এসে এমন কথাই বলল ১৬ বছরের ঋষিকা শবর।

বুধবার আন্তর্জাতিক পাচার-বিরোধী দিবস উপলক্ষে রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের এক দিনের শিশু চেয়ারপার্সন হিসাবে নিযুক্ত হয়ে নাগরাকাটার ঘাটিয়া চা বাগানের বাসিন্দা ঋষিকা তুলে ধরেছে চা বাগানের শিশুদের সমস্যার কথা। তার সঙ্গে এক দিনের জন্য কমিশনের সদস্য হয় জলপাইগুড়ির চা বাগানের ১৫ বছরের খুশবু মুন্ডা এবং ১৬ বছরের শশীকান্ত গোয়ালা।

গ্রাম্য স্তরে শিশু সুরক্ষা কমিটির সদস্য, একাদশ শ্রেণির ঋষিকা এ দিন বলল, ‘‘আমাদের এলাকায় কিছু স্কুল গ্রাম থেকে দূরে হওয়ায় অনেকেই নিয়মিত সেখানে যায় না। স্কুলে শৌচালয়ের ব্যবস্থা নেই, নেই যথেষ্ট শিক্ষক। পারিবারিক হিংসার কারণে শিশুদের উপরে মানসিক চাপ বাড়ে, বাড়ে স্কুলছুটের সংখ্যা। অবসাদগ্রস্ত হলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। রাতে এলাকার রাস্তা ছোটদের জন্য অসুরক্ষিত।’’ শশীকান্ত শোনায়, কাজের খোঁজে ভিন্‌ রাজ্যে যাওয়া বাবা-মায়ের ফেলে যাওয়া সাত বছরের সন্তানের কথা, যার স্কুলে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিল তারা। আবার চা বাগানের ছোটদের নেশা করা, মোবাইলে আসক্তি বন্ধ করতে নিজেদের মতো করে পথও বাতলে দিয়েছে শশীকান্তেরা।

কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস বলেন, ‘‘ছোটদের ভাল রাখতে ওদের কথা শুনতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে চা বাগানের ছোটদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপন করা গিয়েছে। ওদের জন্য সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন চাইছি। কী করলে চা বাগানের খুদেরা ভাল থাকবে, সে কথাই এ দিনের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছে ঋষিকা-খুশবুরা।’’

কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী জানান, ২০১৮ সাল থেকে পাচার-বিরোধী দিবসে প্রান্তিক সম্প্রদায়ের শিশুদের এক দিনের চেয়ারপার্সন করার উদ্যোগ শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘‘চা বাগানের ছোটরা কতটা স্পর্শকাতর, তা সমতলের লোক হয়ে বোঝা সম্ভব নয়। তাদের স্কুলে যাওয়ার পথটুকুও সুরক্ষিত নয়। সেই সংগ্রামের কথাই শুনলাম।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Child Safety Committee Child Safety

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy