Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Domestic Violence

সন্তান অটিস্টিক, মামলা চলাকালীন ফের স্ত্রীকে নিগ্রহে অভিযুক্ত সেনাকর্মী

কৌশিক বসাক নামে ওই সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে শুক্রবার ফের একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২১ ০৫:৩৪
Share: Save:

বধূ-নির্যাতনের মামলা চলছে। তারই মধ্যে ফের স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠল এক সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার শিমুলতলা এলাকার। কৌশিক বসাক নামে ওই সেনাকর্মীর বিরুদ্ধে শুক্রবার ফের একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

কৌশিকের স্ত্রী লাবণী বসাকের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন কারণে অত্যাচার করতেন তাঁর
স্বামী। গর্ভাবস্থাতেও তা থামেনি। বরং অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে ওই দম্পতির কন্যাসন্তানের অটিজ়ম ধরা পড়ার পরে। লাবণীর আরও অভিযোগ, মেয়ের বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতার জন্য তাঁকেই দায়ী করেন কৌশিক।

লাবণী বলেন, ‘‘মেয়ের বয়স যখন দেড় বছর, তখনই বুঝতে পারছিলাম ওর কিছু সমস্যা আছে। নিজে হাতে কিছু তুলে খেত না। চোখের দিকে তাকাত না। শ্বশুরবাড়ির লোক ওকে পাগল বলত।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যে পানাগড় সেনাছাউনিতে বদলি হন কৌশিক। লাবণীও মেয়েকে নিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু অত্যাচার থামেনি। পানাগড়ে স্বামীর হাতে মার খেয়ে তাঁকে সেনা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

ঘটনাচক্রে, ওই হাসপাতালেই এক চিকিৎসক লাবণীর মেয়ে কৌশানীকে দেখে প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কার কথা জানান। ওই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কলকাতার সেনা হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে আসেন বসাক দম্পতি। শনাক্ত হয় মেয়ের বৌদ্ধিক প্রতিন্ধকতা। সেখানেই শুরু হয় থেরাপি। কিন্তু, নির্যাতন থামেনি। লাবণী বলেন, ‘‘মেয়ের সামনেই আমাকে মারধর করা হত। বিষয়টি থেরাপিস্টদের জানাই। তাঁরা স্বামীকে অনুরোধ করেন, বাচ্চার সামনে এমন কিছু না করতে। তাতেও কাজ হয়নি।’’

অভিযোগে লাবণী জানিয়েছেন, মামলা তোলার দাবিতে বুধবার রাতে ফের তাঁকে মারধর করেন কৌশিক। ওই রাতে মা-বাবার কাছে চলে যান লাবণী। বৃহস্পতিবার ভোরে বাবার সঙ্গে যান হাবড়া হাসপাতালে। অবস্থা দেখে চিকিৎসকেরা ওই বধূকে ভর্তি করে নেন। পরের দিন থানায় জেনারেল ডায়েরি করেন লাবণীর মা-বাবা।

কৌশিক অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। হাবড়া হাসপাতালের রিপোর্টে শারীরিক নির্যাতনের উল্লেখ থাকলেও কৌশিকের দাবি, ‘‘সব সাজানো ঘটনা। লাবণীকে মারধর করিনি। মেয়ের প্রতিবন্ধকতার কথা জেনে প্রাথমিক ভাবে খারাপ লাগলেও চিকিৎসা করিয়েছি। আমি মেয়ের দেখভাল করতে চাই।’’

এই টানাপড়েনে কী অবস্থা চার বছরের কৌশানীর? লাবণী জানিয়েছেন, আপাতত দাদু-দিদিমার
কাছে রয়েছে সে। ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করছে না। মায়ের জন্য কান্না জুড়লে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বাড়ির লোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Domestic Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE