Advertisement
E-Paper

স্কুলের বাইরেও দূরত্ব-বিধি বজায় রাখতে নজরদারি, সচেতনতায় জোর

শুধু স্কুলের ভিতরেই নয়, বাইরেও পড়ুয়াদের মধ্যে দূরত্ব-বিধি বজায় থাকছে কি না, তা দেখতে নজরদারি শুরু করছে শহরের কিছু স্কুল।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৪
উচ্ছ্বাস: বহু দিন পরে মুখোমুখি দেখা পড়ুয়াদের। গত সপ্তাহে স্কুল খোলার পরে এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল কলকাতা ও হাওড়ার বহু স্কুলে।

উচ্ছ্বাস: বহু দিন পরে মুখোমুখি দেখা পড়ুয়াদের। গত সপ্তাহে স্কুল খোলার পরে এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল কলকাতা ও হাওড়ার বহু স্কুলে। ফাইল চিত্র।

শুধু স্কুলের ভিতরেই নয়, বাইরেও পড়ুয়াদের মধ্যে দূরত্ব-বিধি বজায় থাকছে কি না, তা দেখতে নজরদারি শুরু করছে শহরের কিছু স্কুল।

স্কুলে দূরত্ব-বিধি মেনে এক বেঞ্চে দু’জনের বসার ব্যবস্থা, মাস্ক পরে থাকা, হাত বার বার স্যানিটাইজ় করা, টিফিন পিরিয়ড না থাকায় স্কুলে কিছু না খাওয়া এবং খেলাধুলো থেকে বিরত থাকার মতো সব করোনা-বিধি স্কুলের ভিতরে মানছে পড়ুয়ারা। কিন্তু ছুটির পরে স্কুলের বাইরে গিয়ে যেন সব সংযমের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। সেখানে শুরু হয়ে যাচ্ছে একে অপরকে আলিঙ্গন করা, এমনকি বাইরের ঝালমুড়ি, চাট ভাগ করে খাওয়াও। প্রায় দশ মাস পরে গত ১২ তারিখ স্কুল খোলার প্রথম দিনেই এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে শহরের বহু স্কুলের বাইরে। পড়ুয়াদের এই আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এ বার স্কুলের বাইরেও নজরদারি চালাবেন বলে ঠিক করেছেন কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষ।

গত ১২ তারিখ সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ছুটির পরে স্কুলের বাইরে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে কার্যত পুনর্মিলন উৎসব শুরু হয়ে যায়। একে অপরকে আলিঙ্গনই শুধু নয়, গ্রুপ সেলফিও ওঠে দেদার। তখন কোনও রকম দূরত্ব-বিধির বালাই ছিল না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। এমনকি, ওই পড়ুয়াদের নিতে এসেছিলেন যে অভিভাবকেরা, তাঁদের অনেকেও দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি মানেননি।

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “স্কুলে এত কড়াকড়ি, কিন্তু স্কুল থেকে বেরিয়েই বিধি ভেঙে দেওয়াটা মোটেও কাজের কথা নয়। এত দিন পরে স্কুলে আসায় প্রথম কিছু দিন হয়তো পড়ুয়াদের উচ্ছ্বাস বেশি ছিল, কিন্তু এর পর থেকে স্কুলের বাইরে, অন্তত স্কুলের গেটের সামনে যেন দূরত্ব-বিধি বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য বাড়তি নজরদারি থাকবে। তবে আমরা তো শুধু স্কুলের গেটের বাইরের অংশেই নজর রাখতে পারব। স্কুল থেকে দূরে চলে গেলে আর নজরে রাখা সম্ভব নয়। তাই স্কুলের প্রতি ক্লাসেই দূরত্ব-বিধি নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হবে। সচেতন করা হবে অভিভাবকদেরও।”

প্রায় একই অভিজ্ঞতা হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের রামমোহন মিশন হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়াই স্কুল ছুটির পরে বাইরে বেরিয়ে দূরত্ব-বিধি ভুলে আলিঙ্গন করেছে। এমনকি, বাইরের খাবার ভাগ করেও খেয়েছে বলে শুনেছি। স্কুলের বাইরে পড়ুয়াদের উপরে নজরদারি করার জন্য তিন জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা স্কুলের গেটের বাইরে থাকবেন। ছুটি হলেই পড়ুয়াদের সোজা বাড়ি চলে যাওয়ার নির্দেশ দেবেন তাঁরা।’’ তিনি আরও জানান, প্রথম দিনের ভুল এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে শুধু পড়ুয়ারাই নয়, দূরত্ব-বিধি না মেনে জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অভিভাবকদেরও। কলেজ স্ট্রিট চত্বরে হিন্দু স্কুল, হেয়ার স্কুলের গেটের সামনে অনেক অভিভাবককে দেখা যায়, ছুটির সময়ে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেন, “আমরা অভিভাবকদের অনুরোধ করেছি, যতটা সম্ভব দূরত্ব-বিধি মেনে স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়াতে। তাঁরা সচেতন না হলে তাঁদের ছেলেমেয়েরা কী করে সচেতন হবে?”

যদিও অভিভাবকদের বক্তব্য, শহরের বেশির ভাগ স্কুলেরই গেট রাস্তার ফুটপাতের উপরে। সেখানে অনেকে মিলে দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ানো খুবই কঠিন। তবে তাঁদের সবার মুখে মাস্ক থাকছে। হাত মাঝেমধ্যেই স্যানিটাইজ় করছেন তাঁরা।

mask School students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy