Advertisement
E-Paper

শব্দ-সন্ত্রাস রোধে জীবে প্রেমের বার্তা পুলিশের

কেউ ভয়ে সেঁধিয়ে যায় সোফার তলায়, ঘরের কোণে। কেউ বা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। কেউ আবার বাজি ফাটলেই চমকে চমকে ওঠে। শব্দবাজি নিয়ে কিছু মানুষের ‘আনন্দের’ খেসারত দিতে গিয়ে দুর্বল হৃদয়ের ছোট প্রজাতির কুকুরের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৬
এ ভাবেই চলছে সচেতনতা প্রসারের চেষ্টা।

এ ভাবেই চলছে সচেতনতা প্রসারের চেষ্টা।

কেউ ভয়ে সেঁধিয়ে যায় সোফার তলায়, ঘরের কোণে। কেউ বা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। কেউ আবার বাজি ফাটলেই চমকে চমকে ওঠে।

শব্দবাজি নিয়ে কিছু মানুষের ‘আনন্দের’ খেসারত দিতে গিয়ে দুর্বল হৃদয়ের ছোট প্রজাতির কুকুরের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমনকী, কালীপুজোর পরের দিন বড় গাছের তলায় পাখির দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

সল্টলেকের বাসিন্দাদের মধ্যে পোষ্য রাখার প্রবণতা তুলনায় বেশি। বাজির শব্দে ওই পোষ্য এবং অন্যান্য পশুপাখিদের যাতে অসুবিধা না হয়, তাই সোশ্যাল মিডিয়া মারফত প্রচার করতে শুরু করেছে বিধাননগর পুলিশ। বিধাননগরের ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ জানিয়েছেন, হাতে সময় অল্প বলে পোস্টার ছাপিয়ে প্রচার সম্ভব হয়নি। কিন্তু হোয়াট্‌সঅ্যাপ, টুইটার, ফেসবুক মারফত বাসিন্দাদের সচেতন করার চেষ্টা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মানুষের চেয়ে অনেক গুণ বেশি শুনতে পায় প্রাণীরা। তাই তাদের কষ্ট অনেক বেশি।

পশু চিকিৎসক সুবীর ভট্টাচার্য জানান, স্পিড্জ, পমেরেনিয়ান, বিগল, ককার স্প্যানিয়েল-এর মতো ছোট প্রজাতির কুকুর ছাড়াও শব্দবাজিতে কষ্ট পায় বেড়াল, খরগোশ, গিনিপিগ, পাখি। তাঁর কথায়, ‘‘এদের মধ্যে খরগোশ ও পাখি সন্ধ্যার পরে বিশ্রাম করে। সেই সময়ে শব্দবাজি ফাটে বলে তাদের কষ্ট অনেক বেশি হয়।’’

সল্টলেকের বাসিন্দা অশোক সরকারের ল্যাব্রেডর রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে কালীপুজোর এক দিন আগে থেকে তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়াতে হয়। অশোকবাবু জানিয়েছেন, বাজির আওয়াজ শুনে তাঁর কুকুরের হৃৎস্পন্দন অনেক গুণ বেড়ে যায়। উদ্বেগ কমাতেই ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু ইদানীং ওষুধেও কাজ হচ্ছে না।

কসবার সৌমিত্র গুহ বলেন, ‘‘গত আট বছর ধরে আমার স্পিড্জ-কে ঘুমের ওষুধ খাইয়েও তেমন কোনও লাভ হয়নি। বাজির আওয়াজ শুরু হলেই খাটের তলায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেয়।’’

চিকিৎসক সুবীরবাবুর কথায়, ‘‘পাখিদের ডিম পাড়ার সময় এসে গেলে শব্দবাজি ফাটলে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ রকম ঘটনাও ঘটেছে যে শব্দবাজির দাপটে অন্তঃসত্ত্বা কুকুর মায়ের গর্ভপাত ঘটে গিয়েছে। রাস্তার কুকুরদেরও খুব সমস্যা হয়।’’

পশুপ্রেমী, বিধায়ক-অভিনেত্রী দেবশ্রী রায় বলেন, ‘‘যে পাড়ায় শব্দবাজি বেশি ফাটে, সেখান থেকে রাস্তার কুকুরেরা পালিয়ে অন্যত্র চলে যায়। অনেকে তো এই সব গৃহহীন কুকুরদের নিয়মিত খাবার দেন। কালীপুজোর পরে আমি এ রকম অনেক ফোন পেয়েছি যে, সেই কুকুরদের তাঁরা আর পাড়ায় খুঁজে পাচ্ছেন না।’’

যাঁরা শব্দবাজি ফাটিয়ে আনন্দ পাচ্ছেন, অসহায় নিরীহ পশু-পাখিদের কথাও তো তাঁদের ভাবা উচিত— অবেদন বিধাননগর পুলিশের।

City police Animals
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy