Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

মেট্রোর জন্য ‘জলপথের’ খোঁজ

কারণ, বরাহনগর-ব্যারাকপুর প্রস্তাবিত মেট্রো রুটের কাজে প্রধান বাধা বি টি রোডের নীচে টালা-পলতা জলপ্রকল্পের পাইপলাইন।

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০২:২০
Share: Save:

‘জলপথের’ সঙ্কট কি অবশেষে মিটতে চলেছে! আপাতত তেমনই জল্পনা জোরদার কলকাতা পুরসভার অন্দরে। না হলে তো রীতিমতো উভয় সঙ্কট পুরসভার! সৌজন্যে বরাহনগর-ব্যারাকপুর মেট্রো প্রকল্প। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জটিলতা তৈরি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস তিনটি বিকল্প ‘জলপথের’ সন্ধান দেবে পুরসভাকে। যাতে শেষ পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা বরাহনগর-ব্যারাকপুর মেট্রোর কাজ শুরু করা যায়। তাই আপাতত বিকল্প ‘জলপথের’ সন্ধান পেতেই উঠেপড়ে লেগেছেন পুরকর্তারা।

কিন্তু কেন এই পদক্ষেপ?

কারণ, বরাহনগর-ব্যারাকপুর প্রস্তাবিত মেট্রো রুটের কাজে প্রধান বাধা বি টি রোডের নীচে টালা-পলতা জলপ্রকল্পের পাইপলাইন। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে ওই পাইপলাইন সরাতে হবে। আর তার ফলেই শহরে জল সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জল সরবরাহ যাতে বিপর্যস্ত না হয়, সে জন্য পলতা জল প্রকল্প থেকে টালা ট্যাঙ্ক পর্যন্ত ৭২ ইঞ্চি ব্যাসের অন্য একটি পাইপলাইন বসানোর পরিকল্পনা করা হয়, যাতে প্রকল্পের কাজ চলাকালীন ওই পাইপলাইন দিয়েই জল সরবরাহ করা যায়। ওই পাইপলাইন বসানোর আগে সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয় রাইটসকে।

যদিও পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত নভেম্বরেই প্রস্তাবিত মেট্রো রুটের মাটির তলায় থাকা জলের পাইপলাইনের জন্য বিকল্প পথের সন্ধান পেতে রাজ্য সরকারের তরফে রাইট্‌সকে পরামর্শদাতা সংস্থা হিসেবে নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। নবান্নে এ নিয়ে বিশেষ বৈঠকও হয়েছিল।

এর পরে প্রস্তাবিত ওই পাইপলাইনের যাত্রাপথ কী হবে, কী ভাবে ওই সমীক্ষার কাজ এগোবে, তা নিয়ে সম্প্রতি পুর ভবনে একটি বৈঠক হয়। সেখানে পুরকর্তাদের পাশাপাশি রাইটসের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সেখানে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে, ৭২ ইঞ্চির জলের পাইপলাইন বসানোর জন্য রাইটস তিনটি বিকল্প পথ চিহ্নিত করবে। তার মধ্যে যে কোনও একটিতে পুরসভা নিজেদের প্রয়োজন মতো পাইপলাইন বসাতে পারে। প্রতিটি পথের খুঁটিনাটি, মাটির নীচের অবস্থা, মাটি পরীক্ষা, সংশ্লিষ্ট রাস্তায় যানবাহনের চাপ কেমন তা থেকে শুরু করে ওখানে দখলদারের সমস্যা রয়েছে কি না, থাকলে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা-সহ যাবতীয় কিছুই সমীক্ষা করার কথা বলা হয় বৈঠকে। প্রতিটি বিকল্প ‘জলপথ’ নির্মাণের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য খরচ কেমন, তা-ও ধরা থাকবে ওই রিপোর্টে।

পুরসভা সূত্রের খবর, ওই সমীক্ষার জন্য দু’কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলা হয় রাইটসকে। পাঁচ ধাপে সে টাকা দেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে। প্রথম ধাপের জন্য ওই পরামর্শদাতা সংস্থাকে ৪০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে তা কমে ৩৪ লক্ষ টাকা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়নি। ফলে সমীক্ষার কাজও শুরু হয়নি।’’ তবে ওই তিনটি বিকল্প ‘জলপথে’র সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত মেট্রো প্রকল্পের কাজ কোনও মতেই শুরু করা যাবে না বলছেন পুরকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE