Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Rashid Munir Khan

মত্ত অবস্থায় কাজে নয়, কড়া বার্তা এসপি-র

কর্তব্যরত অবস্থায় জেলার কোনও কোনও পুলিশকর্মীর মুখ থেকে মদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নানা সময়ে নালিশ গিয়েছে।

বারুইপুরের পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান।—ছবি সংগৃহীত।

বারুইপুরের পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান।—ছবি সংগৃহীত।

সুনন্দ ঘোষ ও শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০২:৩৪
Share: Save:

বছর দেড়েক আগে সোনারপুরে একটি সচেতনতামূলক পদযাত্রায় মত্ত অবস্থায় যোগ দিয়ে বরখাস্ত হন এক পুলিশ আধিকারিক। অভিযোগ, তার পরেও মত্ত অবস্থায় কাজে যোগ দেওয়ার প্রবণতা বদলায়নি ওই সব অঞ্চলের পুলিশকর্মীদের একাংশের। এলাকার সাধারণ মানুষও বিষয়টি টের পেতেন। পুলিশ সূত্রের খবর, বিষয়টি অজানা ছিল না পুলিশকর্তাদেরও। এ বার কাজের সময়ে মত্ত থাকার অভিযোগ ওঠা পুলিশকর্মীদের সতর্ক করে বার্তা দিলেন বারুইপুরের পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান। যার প্রতিলিপি আনন্দবাজারের কাছেও পৌঁছেছে। পুলিশ সুপারের বার্তা আদতে মানুষের দীর্ঘদিনের অভিযোগকে স্বীকৃতি দিল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

গত ৩০ জুন এক বার্তায় পুলিশ সুপার বারুইপুর পুলিশ জেলার অধীনে থাকা সমস্ত থানা, এমনকি বারুইপুর মহকুমা আদালতে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সতর্ক করে জানিয়েছেন, পুলিশকর্মীদের মধ্যে দিনের পর দিন মদের নেশার মাত্রা বেড়েই চলেছে। তা নিয়ে সাধারণ মানুষ ও বিভাগীয় কর্তাদের কাছ থেকে অভিযোগও আসছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। পুলিশকর্মীরা থানা ও ব্যারাকে মদ্যপান করছেন বলে বিভাগীয় কর্তাদের কানে এসেছে। এসপির হুঁশিয়ারি, এর পরে থানা ও ব্যারাকে বসে কোনও পুলিশকর্মী যদি মদ্যপান করেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করাও হতে পারে বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন পুলিশ সুপার। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ওই বার্তায় ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদেরও সতর্ক করেছেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় জেলার কোনও কোনও পুলিশকর্মীর মুখ থেকে মদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নানা সময়ে নালিশ গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অধিকাংশ অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। তাই সেই পুলিশকর্মীদের সতর্ক করতে ওই বার্তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বছর দেড়েক আগে ‘সেফ ড্রাইভ-সেভ লাইফ’ সচেতনতা প্রচারের পদযাত্রায় সোনারপুর থানার এক আধিকারিক মত্ত অবস্থায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। পদযাত্রায় উপস্থিত বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ওই আধিকারিকের আচরণ ধরা পড়েছিল। ঘটনার খবর রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের কানেও পৌঁছয়। তার পরেই ওই পুলিশকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়।

তবে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের পাল্টা যুক্তি, দিনের শেষে বহু পুলিশকর্মী ব্যারাকে ফিরে অল্প পরিমাণে মদ্যপান করেন। জেলায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম থাকায় আচমকা বড় ঘটনা ঘটলে ডিউটিতে না থাকা সত্ত্বেও কর্তাদের নির্দেশে তাঁদেরই ঘটনাস্থলে ছুটতে হয়। সে ক্ষেত্রে হয়তো মুখে মদের গন্ধ পাওয়া যেতে পারে। কখন বড় ঘটনা ঘটবে তা আন্দাজ করা যায় না। এসপি-র হুঁশিয়ারি পেয়ে নিচুতলার কিছু পুলিশকর্মীর আক্ষেপ, ‘‘মদ খাওয়াটাই বোধ হয় ছেড়ে দিতে হবে। তবে আমাদের উপরওয়ালাদের সবাই এমন নিয়ম মানবেন তো?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rashid Munir Khan Alcohol West Bengal Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE