Advertisement
E-Paper

মাঝি নেই, অথৈ জলে মশা-নিধন

নৌকা প্রস্তুত। কিন্তু মাঝি নেই। তাই খালগুলিতে নৌকা নামিয়ে মশা মারার তেল ছড়ানোর পরিকল্পনাও কার্যকর হচ্ছে না বিধাননগর পুরসভায়।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৬

নৌকা প্রস্তুত। কিন্তু মাঝি নেই। তাই খালগুলিতে নৌকা নামিয়ে মশা মারার তেল ছড়ানোর পরিকল্পনাও কার্যকর হচ্ছে না বিধাননগর পুরসভায়।

সকাল হোক বা সন্ধে— সল্টলেকের খালগুলির কাছে গিয়ে দু’দণ্ড দাঁড়ানোর জো নেই কারও। ছেঁকে ধরছে মশার ঝাঁক। কোনওটা ছোট, কোনওটা বা মাছির থেকেও বড়। আর ওই সব খাল থেকে মশারা উড়ে যাচ্ছে সল্টলেকের বিভিন্ন আবাসনে। লিফটে চেপে উঠে যাচ্ছে পাঁচ-ছয় তলাতেও।

বিধাননগর পুরসভার পরিকল্পনা ছিল, খালের জলে নৌকা নামিয়ে মশা মারার তেল ছড়ানো হবে, যাতে মশার লার্ভা মরে যায়। তার জন্য ঘটা করে নৌকাও কেনা হল। তবু তেল ছড়ানোর পরিকল্পনা আপাতত শিকেয়।

বিধাননগর পুরসভার এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, পুরকর্মীদের কারও নৌকা চালানোর কোনও প্রশিক্ষণ নেই। তাই ওই কাজের জন্য আলাদা লোক খোঁজা হচ্ছে। পাওয়া গেলেই খালে মশা মারার তেল ছড়ানোর কাজ শুরু হবে।

প্রতি বছরই মশার উপদ্রব বাড়লে নৌকা চালানোর লোক রাখার কথা মনে হয় বিধাননগরের পুর-কর্তৃপক্ষের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই কথা আর রাখতে পারেন না তাঁরা। এ বারও তারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বিধাননগরে।

বিধাননগর ও রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা মিলে কর্পোরেশন হয়েছে বিধাননগর। কিন্তু এখনও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারল না তারা। কেন যে এখনও বিধাননগর পুরসভাকে বারংবার কলকাতা পুরসভার মুখাপেক্ষী হতে হবে,
তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ সল্টলেকের বাসিন্দারাই।

কত দিন আর কলকাতা পুরসভার উপরে নির্ভর করে থাকতে হবে সল্টলেককে? বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ের আশ্বাস, ‘‘আমরা নিজেরা ভেক্টর কন্ট্রোল ইউনিট (পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ শাখা) তৈরি করতে চাইছি। কিন্তু তার জন্য চাই যথাযথ গবেষণাগার। আর সেই গবেষণাগার তৈরির জন্য জমির প্রয়োজন। আমরা এ নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’

সল্টলেকের এসি ব্লকের এক প্রবীণ বাসিন্দার আক্ষেপ, ‘‘যবে থেকে বিধাননগর পুরসভা তৈরি হয়েছে, আমরা শুনেই যাচ্ছি এটা হবে আর ওটা হবে। সল্টলেকে একের পর এক শপিং মল তৈরি গয়ে গেল, ফাঁকা জায়গায় একের পর এক আবাসন তৈরি হল, নতুন জায়গায় বস্তিও গড়ে উঠল। শুধু পুরসভাই নিজের পায়ে এখনও দাঁড়াতে পারল না।’’

বিই ব্লকের এক বৃদ্ধার মন্তব্য, ‘‘চোর-ডাকাত নয়, স্রেফ মশার ভয়ে সকাল-সন্ধ্যা জানলা-দরজা বন্ধ করে বসে থাকতে বাধ্য হই। প্রতিবার ভোটের সময়ে প্রার্থীরা এসে আশ্বাস দিয়ে যান, এই সব কিছু ঠিক হয়ে গেল বলে! কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।’’

সল্টলেকে মশার আঁতুড়ঘরের কোনও অভাব নেই। বস্তি, শপিং মল, আবাসন, বাগান, পরিত্যক্ত কারখানা ও গুদামের সংখ্যা প্রচুর। কিন্তু কোথাও পুরসভার তরফে নিয়মিত অভিযান চালানো হয় না। এক পুর আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘এ সব দেখার জন্য মাত্র ২৩৪ জন কর্মী রয়েছেন। প্রতি বারই লোক বাড়ানোর কথা বলা হয়। সবই হচ্ছে, কিন্তু আসল কাজটাই হচ্ছে না।’’

Bidhannagar Municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy