আবাসনের মূল গেটের বাইরে সবে বেরিয়েছেন এক বৃদ্ধা। আচমকা দুই মোটরবাইক আরোহী এসে দাঁড়াল পাশে। কিছু বোঝার আগেই পিছনে বসা যুবক বৃদ্ধার গলার হার ধরে টান মারলে হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যান তিনি। হার নিয়ে চম্পট দেয় ওই দুই দুষ্কৃতী।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে নেতাজিনগর থানা এলাকার বৈষ্ণবঘাটা রোডে। আক্রান্ত বৃদ্ধার নাম মীরা বসু (৬২)। তাঁর বাড়ি বৈষ্ণবঘাটা রোডে। ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকায় দু’সপ্তাহের মধ্যে দু’টি ছিনতাই হল। প্রথম ঘটনাটি ঘটে ১৪ জুলাই খানপুর রোডে। পুলিশ জানায়, সে দিন জয়শ্রী সেনগুপ্ত নামে এক মহিলার গলা থেকে সোনার হার ছিনতাই করে পালায় বাইকআরোহী দুই দুষ্কৃতী।
পুলিশ জানিয়েছে, শুধু নেতাজিনগর নয় শহরে গত এক মাসে প্রায় ২০টি ছিনতাই হয়েছে। গত দু’সপ্তাহে পরপর ছ’টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে খিদিরপুর, সার্ভে পার্ক, চিৎপুর, গিরিশ পার্ক-সহ কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানা এলাকায়। আগে ইলিয়ট পার্কে প্রাতর্ভ্রমণে আসা এক মহিলার সোনার হার ছিনতাই করে পালিয়েছিল এক যুবক। ওই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই হরিদেবপুর, টালিগঞ্জে এবং যাদবপুরেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল।
শহরে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন পুলিশকর্তারা। শনিবার কলকাতা পুলিশ কমিশনারের ক্রাইম কনফারেন্সে ছিনতাই নিয়ে গোয়েন্দাদের সর্তক করেন কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। তার পরেও ছিনতাইয়ের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ব্যর্থতাই প্রকট হচ্ছে বলে পুলিশের একাংশের মত।
পুলিশকর্তাদের একাংশের দাবি, পুজোর আগে প্রতি বছর শহরে ছিনতাই বাড়ে। কিন্তু এ বার অনেক আগে থেকেই ছিনতাইবাজদের দাপট দেখা যাচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের একাংশ জানান। ছিনতাইয়ের তদন্তে গোয়েন্দারা অনুমান, কিছু ছিনতাইবাজ সম্পতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তারাই ওই ঘটনায় যুক্ত।
পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে পাড়ার দোকানে জিনিস কিনতে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরোন মীরাদেবী। রাস্তায় নামার সঙ্গে সঙ্গেই মোটরবাইকে চড়ে দুই দুষ্কৃতী পিছন থেকে তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়। পুলিশকে বৃদ্ধা জানিয়েছেন, বাইকটি এমন ভাবে দাঁড়িয়েছিল যে তিনি রাস্তার একদম ধারে চলে গিয়েছিলেন। তখনই পিছনে বসে থাকা দুষ্কৃতী তাঁর গলার হার টান মেরে নিয়ে নাকতসার দিকে চলে যায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, কালো রঙের মোটরবাইক করে ওই দুষ্কৃতীরা এসেছিল। তাদের মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল।
অন্য দিকে, এক তরুণীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই বাইকআরোহীকে। রবিবার, প্রিন্সেপ ঘাটের কাছে। ঝুম্পি ঘোষ নামে ওই তরুণী সোমবার লালবাজারে ফোনে অভিযোগ করেন, তিন জন বাইকআরোহী তাঁর ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। খবর পেয়েই বেকারি রোডে টহলদার পুলিশ বাইকটি আটকায়। এক জন পালালেও ধরা পড়ে বাকি দু’জন। ধৃতদের নাম আশিস ও বিশাল। তারা দু’জনেই একবালপুরের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, তাদের বিরুদ্ধে হেস্টিংস থানায় ছিনতাইয়ের মামলা রজু করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy