‘মোদী হাওয়ায়’ এক লাফে উত্থান ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনকী বিরোধী দলের তকমা হারানোর প্রমাদ গণতে শুরু করেছিল বামেরা। আর বিজেপির নেতারাও নিজেদের একমাত্র বিরোধী দল বলে দাবি করতে শুরু করেছিলেন।
সেই ‘হাওয়া’র প্রভাব এসে পড়েছিল সল্টলেক ও রাজারহাটেও। লোকসভা নির্বাচনে সল্টলেক বিধানসভা এলাকা সাড়ে ছ’হাজার ভোটে করায়ত্ত করেছিল বিজেপি। পুরসভার নিরিখে তৎকালীন সল্টলেকে ১৮টি ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিল তারা। রাজারহাটেও তারা টক্কর দিয়েছিল তৃণমূলকে। সেখানে ৫টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল বিজেপি।
কিন্তু বহরে বাড়লেও বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনে হাতে গোনা কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া সে ভাবে ‘দেখা’ নেই বিজেপির। যদিও সে কথা মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, মানুষ ঠিক মতো ভোট দিতে পারলে বিজেপিকেও লড়াইয়ে দেখা যাবে।
নেতারা যা দাবিই করুন না কেন, সল্টলেকে উমাশঙ্কর ঘোষদস্তিদার, শীলা টন্ডন, পারমিতা সাহা, সঞ্জু সর্দার, গৌতম দাস এবং রাজারহাটে হাতে গোনা কয়েক জনকে লড়াইয়ে দেখা গেলেও বাকিদের ক্ষেত্রে ছবিটা তথৈবচ। যদিও তার জন্য শাসক দলের সন্ত্রাসকেই দায়ী করেছেন বিজেপি নেতারা। প্রচারের শেষ পর্বে এসে সল্টলেকে বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহও সেই সন্ত্রাসের অভিযোগই করেছেন। পাল্টা কটাক্ষের সুরে তৃণমূল জানাচ্ছে, বিজেপির সংগঠন নেই, তাই ওই অজুহাত দিচ্ছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সল্টলেকে দু’টি ওয়ার্ডে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন সিদ্ধার্থনাথ। তাঁর আগে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী সঞ্জু সর্দারের বাড়িতে যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, প্রচারের শুরু থেকে তৃণমূল যে ভাবে ভয় দেখাচ্ছে, তাতে আতঙ্কিত প্রার্থীর পরিবার। তিনি সেই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছেন বলে জানালেন সিদ্ধার্থ। বললেন, ‘‘বর্তমান রাজ্য সরকার ফ্যাসিস্টদের মতো কাজ করছে। ভয় না পেয়ে পুর-নিগমের নির্বাচনেই তার জবাব দেবে মানুষ।’’ তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার যে কায়দায় ভোট করাচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনে সেই জারিজুরি খাটবে না।’’
বিজেপি নেতা অশোক সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুর-নির্বাচনে শাসক দলের সন্ত্রাস যতই বাড়ছে, ততই নিশ্চুপ থাকছে প্রশাসন। ভোটারেরা ভোট দিতে না পারলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
মঙ্গলবার রাতে বাগুইআটি-হাতিয়ারায় এক নির্বাচনী প্রচারে এসে কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াও সন্ত্রাস প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুলিশ ও গুন্ডাদের নিয়ে ভোট করাতে চাইছে তৃণমূল প্রশাসন। ইতিমধ্যে চার দিকে ওই গুন্ডাবাহিনী ছড়িয়ে পড়েছে। সকলে মিলে জোটবদ্ধ হয়ে এর জবাব দিতে হবে।’’