Advertisement
E-Paper

কালান্তক মার্চ: কলকাতার কালো দিন

প্রথমটি ৩ মার্চ। দ্বিতীয়টি ৩১ মার্চ। মাঝে তিন বছরের ব্যবধান। দু’টি উড়ালপুল দুর্ঘটনা কাঁপিয়ে দেয় গোটা রাজ্যকে। দ্বিতীয়টির, মানে বৃহস্পতিবারের ভয়াবহতার ব্যপ্তি তো আরও ব্যাপক! কিন্তু পার্থক্যটা কী রকম? অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে কি শিক্ষা নিতে পারত না বিবেকানন্দ উড়ালপুলের নির্মাতারা?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৬ ১৩:৫২

প্রথমটি ৩ মার্চ। দ্বিতীয়টি ৩১ মার্চ। মাঝে তিন বছরের ব্যবধান। দু’টি উড়ালপুল দুর্ঘটনা কাঁপিয়ে দেয় গোটা রাজ্যকে। দ্বিতীয়টির, মানে বৃহস্পতিবারের ভয়াবহতার ব্যপ্তি তো আরও ব্যাপক! কিন্তু পার্থক্যটা কী রকম? অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে কি শিক্ষা নিতে পারত না বিবেকানন্দ উড়ালপুলের নির্মাতারা?

২০১৩-র ৩ মার্চ কেষ্টপুর খালের উপরে উড়ালপুলের বাইপাসমুখী লেনের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। ঘটনায় এক গাড়িচালক ও খালাসি আহত হন। এর পর তুমুল হইচই হয়। প্রকল্পের তত্বাবধায়ক সংস্থা কেএমডিএ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ম্যাকিনটোশ বার্ন এবং নকশাকার কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস (সিইএস) পরস্পরের উপর দোষ চাপিয়ে অব্যাহতি পাওয়ার চেষ্টা করে। দুর্ঘটনার মূল কারণ খুঁজে দেখতে এর পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব দেয় রাজ্য সরকার। আর্কিটেকচার বিভাগের অভিজ্ঞ শিক্ষক দীপঙ্কর চক্রবর্তীকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়।

আরও পড়ুন: ইতিহাসে সেতু ভেঙে ১০ দুর্ঘটনা

১.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ৪০ মিটারের একটি ডেক ভেঙে পড়েছিল। কেষ্টপুর খালের দু’পাশে দু’টি পিলারের উপরে ওই ডেকটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। ভিআইপি রোড থেকে উঠে অনেকটা বেঁকে উড়ালপুলটি বাইপাসে মিশেছে। ডেকটি এই বাঁকের মধ্যেই ছিল। তৈরির সময়েই বাঁকের অংশে সেতুটিকে মজবুত করতে খালের উপরে একটি পিলারের প্রস্তাব উঠেছিল। সূত্রের খবর, সেচ দফতর আপত্তি করায় তা কার্যকরী হয়নি।
ভাঙা অংশ জোড়া দেওয়ার পরিকল্পনা করার সময়ে বাঁকের অংশটি মজুবত করতে আবারও একটি পিলার তৈরির কথা ওঠে। কিন্তু সে বারও সেচ দফতর আপত্তি করে।

সে বছর ১৫ এপ্রিল টেন্ডারে কোনও নির্মাণসংস্থা ভাঙা অংশে কাজের ব্যাপারে আগ্রহ না দেখানোয় ফাঁপড়ে পড়ে নগরোন্নয়ন দফতর। শেষ পর্যন্ত ফের টেন্ডার হয়। সেই কাজ শেষে উড়ালপুলটি চালু হয় ২০১৪-এর মার্চ মাসে।

সেতু নির্মাণকালে এত বড় দুর্ঘটনা, তাহলে কেন একই শহরে আরও একটু সেতু তৈরির ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হল না? পার্থক্যটাই বা কী? চার দশকের অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার কেএমডিএ-র প্রাক্তন ডিডি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘উল্টোডাঙায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেতু চালুর তিন বছর বাদে। পোস্তায় চালু না হতেই। দ্বিতীয়ত, উল্টোডাঙায় ঙিরি লরির ওজন বা ধাক্কায় বিপর্যয় হয়। পোস্তায় সঠিক কারণটা এখনও প্রমাণিত নয়। তবে, তদারকিতে গাফিলতির বড় অভিযোগ উঠেছে।’’

কেএমডিএ-নিয়ন্ত্রিত প্রকল্পে এত বড় দুর্ঘটনা হতে পারে, বিশ্বাস করতে পারছেন না কেএমডিএ-র আর এক প্রাক্তন ডিজি সুবোধ ভট্টাচার্য। তার প্রশ্ন, দুর্ঘটনার সঠিক কারণ যা-ই হোক, কেন ঢালাইয়ের সময় বা এর পর উড়ালপুলের নিচটা ঘিরে রাখা হল না? ১৯৭১ থেকে তিন দশক মহানগরীর প্রায় ১৪টি উড়ালপুল নির্মাণের তদারকির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুবোধবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘পার্কসার্কাস উড়ালপুল প্রবল ঝুঁকি নিয়ে তৈরি করাতে হয়েছিল। উদ্বোধনের সময় খোদ জ্যোতি বসু আমাকে বাহবা জানিয়েছিলেন।’’

flyover collasp kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy