দক্ষিণ দমদমের মতিঝিলে উদ্যোক্তাদের শিবির বানচাল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগপত্র স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত পৌঁছেছিল। সেই ঘটনার প্রায় এক মাস পরে আজ, রবিবার শহরের একটি সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে ৩০ জন দাতাকে নিয়ে রক্তদানের পরিকল্পনা করেছেন উদ্যোক্তারা।
দমদম মতিঝিলের চারুভিলা ফার্স্ট বাইলেনের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, রক্তের সঙ্কট চলাকালীন কী ভাবে বানচাল হওয়া শিবির করা যায়, সেই সংক্রান্ত চেষ্টা চলছিল। যে মাঠে গত ৭ এপ্রিল শিবিরের আয়োজন হয়েছিল তার অনুমতি নেই বলে জানিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ রায়চৌধুরী। অনুমতির জটিলতা এড়াতে একটি গ্যারাজে রক্তদান শিবিরের আয়োজনের কথা ভাবা হয়। তা বাস্তবায়িত না হলে একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করা হয়। পরে অবশ্য ফ্ল্যাটের মালিকও বেঁকে বসেন। এরই মধ্যে বিষয়টি জানতে পারেন রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মী। তিনি উদ্যোক্তাদের জানান, ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়েও রক্ত দেওয়া যায়।
উদ্যোক্তাদের ইচ্ছেপূরণ সম্ভব তা জানতে পেরে দাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত ৩০ জন দাতার সম্মতি আদায়ে সক্ষম হয়েছেন উদ্যোক্তারা। এর পরে শহরের একটি ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয়, আজ, রবিবার ব্লাড ব্যাঙ্কে চত্বরেই তাঁরা শিবির করবেন। পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে সেই ব্লাড ব্যাঙ্কের নাম গোপন রাখা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের এক জন জানান, দু’টি গাড়িতে কয়েক জন দাতাকে নিয়ে যাওয়া হবে। বাকিরা অ্যাপ ক্যাবের সাহায্যে গন্তব্যে পৌঁছনোর কথা ভেবেছেন।
গত ৭ এপ্রিলের শিবিরে ৭০ জনের রক্ত সংগ্রহের কথা ছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের। কিন্তু শিবিরের দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে একেবারে অনভিপ্রেত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা। সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে উদ্যোক্তারা লিখিত অভিযোগে জানান, ‘লোকাল পলিটিক্যাল পার্টি এবং জনপ্রতিনিধির বাধার জন্য আমরা শিবির করতে পারিনি’।
পত্রপাঠ যে অভিযোগ খারিজ করে সুরজিৎ বলেছিলেন, ‘‘কোনও শিবিরের আয়োজন করা হয়নি। মতিঝিলে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরাও আসেননি। ভোটের সময়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বিরোধীরা একজোট হয়ে ওই শিবিরের আয়োজন করেছে।’’ যদিও সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের বক্তব্য ছিল, শিবিরের উদ্যোক্তা হিসাবে কোথাও কোনও রাজনৈতিক দলের নাম ছিল না।
রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কেউই এই ঘটনা সমর্থন করতে পারেননি। স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিক মহলেও এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তাঁদের বক্তব্য ছিল, গরমের সময়ে এমনিতেই রক্তের সঙ্কট হয়। এর উপরে এ বছর ভোটের জন্য নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকায় পাড়ায় পাড়ায় যে শিবিরগুলি হয় তার সংখ্যা অনেক কম। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, ভোটের ডিউটির জন্য বাহিনীর কাছে আর্জি জানিয়েও প্রত্যাশিত ফল মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে ৭০ জন দাতার শিবির বাতিলের ঘটনা কেউই মেনে নিতে পারেননি।
শনিবার দমদমের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক প্রতিনিধি বলেন, ‘‘রক্তের সঙ্কট মেটাতে শিবিরের আয়োজন করে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে দিতে চেয়েছিলাম। সেই ইচ্ছেপূরণের সুযোগ পাওয়াটাই বড় পাওনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy