Advertisement
E-Paper

অস্থিমজ্জার সফল প্রতিস্থাপন এনআরএসে

ওই যুবকের নিজের অস্থিমজ্জাই সফল ভাবে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (এনআরএস) হেমাটোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০২:৫০
পিন্টু সেন।

পিন্টু সেন।

বছর পঁচিশের তরুণকে এত তাড়াতাড়ি পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে, মানতে পারেননি চিকিৎসকেরাও। তাঁরাই জোর দিয়েছিলেন অস্থিমজ্জা (বোন ম্যারো) প্রতিস্থাপনের উপরে। টানা ৫৬ দিন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, যমে-মানুষে টানাটানি এবং আবার চিকিৎসার পরে অবশেষে চেষ্টার জয় হয়েছে। আপাতত ক্যানসারমুক্ত শরীর নিয়ে গত ৫ তারিখ বাড়ি ফিরেছেন ফালাকাটা কুঞ্জনগরের বাসিন্দা পিন্টু সেন।

ওই যুবকের নিজের অস্থিমজ্জাই সফল ভাবে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (এনআরএস) হেমাটোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানান, লিম্ফনোড ক্যানসারে আক্রান্ত যুবকের দেহে আবার নতুন করে ক্যানসার ফিরে আসার আশঙ্কা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে সুস্থ জীবনের স্বপ্ন দেখতেই পারেন পিন্টু। তাঁকে নিয়ে ২০১৭ থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১ জন ক্যানসার আক্রান্তের দেহে তাঁদের নিজের অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা গিয়েছে এনআরএসে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট কেন্দ্রে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে কেন্দ্রের কাজে তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি, সেটাই গত এক বছরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নিয়মিত সেখানে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন হচ্ছে। এই মুহূর্তে আরও দু’জন ক্যানসার রোগী প্রতিস্থাপনের জন্য ভর্তি। অপেক্ষমাণের তালিকায় ২৫ জন।

গোটা পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্তরে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন হয় মাত্র দু’টি জায়গায়। এনআরএস এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু একটি কেন্দ্রও ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভাল ভাবে কাজ করতে পারেনি, তা মানছে স্বাস্থ্য দফতর। ২০১৬ থেকে পরিকাঠামোর উন্নতির সঙ্গে এক লাফে বেড়ে প্রতিস্থাপনও। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে যে অস্ত্রোপচার করতে ৯-১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়, তা সরকারি কেন্দ্রে নিখরচায় হচ্ছে। তা-ও আবার হচ্ছে আধুনিকতম যন্ত্রপাতি ও পরিকাঠামোয়।’’

এনআরএসের হেমাটোলজির বিভাগীয় প্রধান প্রান্তর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চার বছরে এখানে মাত্র ১৬ জনের দেহে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপিত হয়। সেখানে শুধু ২০১৭ সালেই ১০ জনের দেহে এটি করা গিয়েছে। কিছু দিনেই অন্যের দেহ থেকে অস্থিমজ্জা নিয়ে রোগীর দেহে প্রতিস্থাপনের (অ্যালোজেনিক) প্রক্রিয়াও শুরু হবে।’’ একই ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মেডিক্যালের কেন্দ্রটিও। সেখানকার বিভাগীয় প্রধান মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০১২ থেকে ১৫ পর্যন্ত তিন বছরে মাত্র ১২ জনের দেহে তাঁদের নিজের অস্থিমজ্জা (অটোলগাস) প্রতিস্থাপিত হয়। ২০১৫ সালে এই কেন্দ্রের কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পরিকাঠামোর উন্নতির পরে তা আবার চালু হয় ২০১৬-র নভেম্বরে। তখন থেকেই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে।
গত দেড় বছরে মেডিক্যালের কেন্দ্রে ১০টি অটোলগাস এবং ৫টি অ্যালোজেনিক বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন হয়েছে এখানে।’’

Bone Marrow Transplant NRS Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy