লিফ্টে খাঁজ থেকে টেনে বার করা হচ্ছে যুবককে। ছবি: সুমন বল্লভ।
দুপুর থেকেই বিকল হয়ে ছিল শপিং মলের পার্কিং লটে গাড়ি ওঠানামার লিফ্ট। বৃহস্পতিবার রাতে সেই লিফ্ট সারানোর জন্য এসেছিলেন এক কর্মী। কিন্তু সারানোর শেষ মুহূর্তেই ঘটল বিপত্তি। পা ফস্কে লিফ্ট ও পার্কিং লটের দেওয়ালের মাঝে ঢুকে গেলেন তিনি। যখন টেনে তাঁকে বার করা হল, ততক্ষণে তাঁর ডান পা কার্যত চিঁড়েচ্যাপ্টা হয়ে গিয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চার দিক। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ওই যুবক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভিড়ে ঠাসা নিউ মার্কেট চত্বরে।
কী ঘটেছিল এ দিন?
পুলিশ সূত্রে খবর, নিউ মার্কেট চত্বরে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড শপিং মলের সঙ্গেই রয়েছে এই পার্কিং লট। একটি বেসরকারি সংস্থা সেটি দেখভাল করে। সেই পার্কিং লটেরই এক নম্বর গেটের গাড়ি ওঠানামার লিফ্টটি এ দিন দুপুর থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য বন্ধ ছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পার্কিং লটের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা অস্থায়ী কর্মী শুভঙ্কর দেয়াসি সেই লিফ্টটি সারানোর কাজ শুরু করেন। পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “সারানো প্রায় হয়ে এসেছিল। এমন সময়ে ওই কর্মী চিত্কার করে ওঠেন। গিয়ে দেখি, লিফ্ট ও দেওয়ালের মাঝে উনি আটকে গিয়েছেন।”
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, হাইড্রলিক লিফ্টের উপরে দাঁড়িয়ে কাজ করার সময়ে কোনও ভাবে তা চালু হয়ে যায়। তখনই ওই কর্মী পা ফস্কে লিফ্ট ও পার্কিং লটের দেওয়ালের খাঁজে পরে যান। সেখানে তাঁর শরীরের নিম্নাংশ আটকে যায়। তিনি চিত্কার করতে থাকেন। বেরোনোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলেও কিছুতেই তা সম্ভব হয় না। জিন্স ছিঁড়ে রক্তে ভেসে যেতে থাকে লিফ্ট। ওই দৃশ্য দেখে ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আর এক সহকারী কর্মী। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন শপিং মলে আসা লোকজন।
এর পরেই ছুটে আসেন পার্কিং লটের অন্য কর্মীরা। কিন্তু তাঁরাও ওই কর্মীকে বার করতে ব্যর্থ হন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ, কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী ও দমকল। প্রথমে টানাটানি করে ওই কর্মীকে লিফ্টে ও দেওয়ালের খাঁজ থেকে তোলার চেষ্টায় ব্যর্থ হন সকলেই। পরে লিফ্টের কিছুটা অংশ গ্যাস কাটার দিয়ে কাটতে শুরু করেন দমকল-কর্মীরা। পরে লিফ্টের মধ্যে লোহার শিকল আটকে উপর থেকে সেটিকে কিছুটা টেনে তোলা হয়। তাতেই ওই কর্মীর শরীরের কিছুটা অংশ বেরিয়ে আসে। এর পরে সকলে মিলে তাঁকে টেনে খাঁজ থেকে বার করে আনেন।
পুলিশ জানায়, এর পরেই বছর আঠাশের শুভঙ্করকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে চিকিত্সকেরা জানান, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। তবে তাঁর ডান পা গুরুতর জখম হয়েছে। কী করে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। পুলিশ জানায়, শুভঙ্করের বাড়ি হাওড়ার আমতায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy