মাঝরাতে টায়ার ফাটার মতো বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল বাসিন্দাদের। বাইরে বেরিয়ে তাঁরা দেখেন, এক তরুণী রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছটফট করছেন। আর কিছুটা দূরে তিন যুবক দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।
বুধবার রাতের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার মাদারতলা লেনে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে নিজের বোন নুরজাহান বেগম নামে বছর পঁচিশের ওই তরুণীকে তাঁর দাদা শেখ সেলিম গুলি করে খুন করার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই তরুণীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময়ে সেলিমের সঙ্গে ছিলেন ওই তরুণীর স্বামী মেহেন্দি হুসেন এবং তাঁর আর এক ভাই মহম্মদ ইমতিয়াজ। ঘটনার পরেই তাঁরা পালিয়ে যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে নুরজাহানের বিয়ে হয় পাশের এলাকার মেহেন্দি হুসেনের সঙ্গে। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি ইসরাফিল নামে এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় নুরজাহানের। মাসখানেক আগে ইসরাফিলের সঙ্গে পালিয়ে যান নুরজাহান। বুধবার রাতে তাঁরা দু’জনেই বাড়ি ফিরে আসেন। এই খবর পেয়ে সেলিম ওই রাতেই ইসরাফিলের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধর করেন। পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পরে রাত ১২টা নাগাদ নুরজাহান দাদার বাড়িতে কথা বলতে গেলে তাঁদের মধ্যে অশান্তি হয়। অভিযোগ, ওই সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র বার করে বোনের দিকে গুলি চালান সেলিম। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ওই তরুণী। গুলির আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে রাস্তায় টহলরত পুলিশ তরুণীকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গুরুতর জখম হলেও ওই তরুণীর অবস্থা স্থিতিশীল। গুলি তাঁর ডান কানের পাশ দিয়ে লেগে বেরিয়ে গিয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা শেখ শওকত বলেন, “জানলা দিয়ে দেখলাম দাদা আর বোনের ঝগড়া হচ্ছিল। তার পরেই টায়ার ফাটার মতো শব্দ হল। বেরিয়ে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটি পড়ে।” পুলিশ খবর পেয়ে জখম তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনার পরেই সেলিম, তাঁর সঙ্গে থাকা ভাই ইমতিয়াজ এবং তরুণীর স্বামী পালিয়ে গিয়েছেন। তিন জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নুরজাহানের আর এক ভাই মহম্মদ সাদ্দামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।