Advertisement
E-Paper

মসৃণ উড়ালপথের নীচে কাদা মাখামাখি বজবজ ট্রাঙ্ক রোড

গিরি নেই, কান্তার নেই, তবু দুর্গম পথ! খানাখন্দে ভরা সে পথ দিয়ে যেতে গিয়ে ভয় হয়, এই বুঝি উল্টোল। 

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৮
বিপজ্জনক: ঝুঁকির পথেই জারি দুর্গম সফর। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বিপজ্জনক: ঝুঁকির পথেই জারি দুর্গম সফর। ছবি: রণজিৎ নন্দী

গিরি নেই, কান্তার নেই, তবু দুর্গম পথ! খানাখন্দে ভরা সে পথ দিয়ে যেতে গিয়ে ভয় হয়, এই বুঝি উল্টোল।

চোখ বুঝে প্রার্থনা করা ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। অথচ এর মাথার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে মসৃণ ঝকঝকে রাস্তা, যা ধরে দ্রুত পৌঁছনো যায় গন্তব্যে।

এমনই বেহাল অবস্থা বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এই পথ, গত কয়েক বছর ধরে বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। যার অন্যতম কারণ বলা হচ্ছিল, ওই রাস্তার উপরে উড়ালপুলের নির্মাণকাজ। সেই নির্মাণ শেষ হয়ে উদ্বোধন হয়ে গেল উড়ালপুলটির। ঝাঁ চকচকে সেই মসৃণ পথ দিয়ে প্রায় পিছলে যাচ্ছে গাড়ি। কিন্তু ভাগ্য খুলল না নীচের বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের। খানাখন্দে ভরা দুর্গম সে পথ পেরোতে তিন গুণ বেশি সময় লেগে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মহেশতলা পুরসভার নবনির্মিত উড়ালপুলটি দিয়ে মূলত ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ট্রাক যায়। অটো এবং বাসের জন্য বরাদ্দ ওই ভাঙাচোরা পথ।

নিত্যদিন বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের যানজট সরিয়ে গতি আনতে জিঞ্জিরাবাজার থেকে বাটানগর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপুলটি তৈরি হয়। চলতি বছর জানুয়ারিতে সেটি উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন মুখ্যমন্ত্রী, উড়ালপুলের নীচের বেহাল রাস্তা দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেন। এমনকি সেই সময়ে বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের শোচনীয় অবস্থা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই রাস্তার হাল এখনও বদলায়নি।

শুধু বড় বড় খানাখন্দই নয়, জলকাদায় মাখামাখি থাকে এই পথ। বৃষ্টিহীন এই শীতেও বজবজ ট্রাঙ্ক রোড দেখে ভ্রম হয়, বুঝি বর্ষা এল। অথচ দীর্ঘ দিন ধরে বৃষ্টিই হয়নি। তবে কী ভাবে জমছে জল? বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের গোপালপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, রাস্তার পাশে নিকাশি ভেঙে সেই জল রাস্তার উপরে উপচে পড়ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, ওই পথে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগেই বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন অনেক যাত্রী। জলে ভরা গর্তে একটা মিনিবাস পড়ে বিপজ্জনক ভাবে হেলে গিয়েছিল। যাত্রীদের কোনও রকমে বাস থেকে বার করে আনা হয়েছিল।’’

যাত্রীদের অভিযোগ, এই পথে দু’চাকার গাড়ি চালিয়ে যাওয়া সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জের। এক বাইকচালক রবি হালদার বলেন, ‘‘রাস্তা খারাপ থাকায় বড় গাড়িগুলি নিয়ম ভেঙে লেন পাল্টে উল্টোদিকের রাস্তায় চলে যায়। এর ফলে ছোটো গাড়িগুলি অনেক সময়েই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। তাই দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি বাড়ে।’’ রাতে গাড়ি চালানো আরও বিপজ্জনক বলে ব্যাখ্যা গাড়ি চালকদের।

রাস্তার দুরাবস্থার কথা জানেন মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস। তাঁর অবশ্য দাবি, ‘‘ওই রাস্তার মেরামতি শুরু হয়েছে। দ্রুত সে কাজ শেষও হয়ে যাবে।’’ যদিও সেই আশ্বাসবাণীতে তুষ্ট নন যাত্রীরা। তাঁদের মতে, ‘‘শীত শেষ হতে চলেছে। ঝড়-বৃষ্টির মরসুম সামনে, তখন তো রাস্তার হাল আরও খারাপ হবে। জোড়াতালি নয়, এখন এই রাস্তা ভাল ভাবে মেরামতি করা হোক।

Budge Budge Trunk Road Condition Flyover
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy