Advertisement
০১ মে ২০২৪

চার মাসেও শুরু হয়নি সেতু সারাই, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা

মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত উড়ালপুল ও সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, উড়ালপুলের নীচে কোনও দোকান থাকলে তাদের পুনর্বাসন দিয়ে মেরামতির কাজ করতে হবে।

বেহাল: মরচে ধরেছে অরবিন্দ সেতুর বিভিন্ন অংশে। —ফাইল চিত্র

বেহাল: মরচে ধরেছে অরবিন্দ সেতুর বিভিন্ন অংশে। —ফাইল চিত্র

সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০২:২০
Share: Save:

সেতুর সংস্কার হবে। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মুচিবাজারের কাছে অরবিন্দ সেতুর নীচ থেকে ১৮টি দোকান ডানলপের সরকারি জমিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পাঁচ মাস আগে। কিন্তু অরবিন্দ সেতু মেরামতির কাজ আজও শুরু হয়নি। কবে সেই কাজ শুরু বা শেষ হবে, তার কোনও উত্তর নেই। তাই সেখান থেকে সরে যাওয়া ব্যবসায়ীরাও জানেন না, পুরনো জায়গায় আবার কবে তাঁরা ফিরতে পারবেন। ওই দোকান-মালিকেরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চেয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমকে।

মাঝেরহাট উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত উড়ালপুল ও সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, উড়ালপুলের নীচে কোনও দোকান থাকলে তাদের পুনর্বাসন দিয়ে মেরামতির কাজ করতে হবে। কলকাতার ক্ষেত্রে কেএমডিএ এবং রাজ্যের অন্য জায়গায় সেতু মেরামতির জন্য পূর্ত দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিছু জায়গায় কাজ শুরু হলেও অনেক ক্ষেত্রেই কাজ বিশেষ এগোয়নি।

রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম প্রায় ৪০ বছর আগে ১৮টি ছোট সংস্থাকে অরবিন্দ সেতুর নীচে দোকানঘর ভাড়া দিয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন ধরনের ছোট কারখানা ও দোকান রয়েছে। ওই দোকান-মালিকদের নিয়ে তৈরি হওয়া অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চঞ্চল দে-কে গত ১৩ অক্টোবর ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের এস্টেট ম্যানেজার চিঠি দিয়ে জানান, অরবিন্দ সেতুর অবস্থা খুব খারাপ। তাই মেরামতির প্রয়োজন। ২০ নভেম্বরের মধ্যে সেতুর নীচ থেকে দোকানগুলি সরিয়ে নেওয়ার কথাও লেখেন তিনি। এর জন্য ডানলপের কাছে অস্থায়ী দোকানঘর তৈরি করে দেয় ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম। তিন মাসের মধ্যে উড়ালপুল মেরামত করে সেতুর নীচে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় দোকান-মালিকদের। দোকানগুলির বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দেওয়া হয়।

চঞ্চলবাবু বলেন, ‘‘আমরা ১৮ জন দোকান-মালিক মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে নিয়ে সরে এসেছি পাঁচ মাস আগে, গত জানুয়ারিতে। কিন্তু উড়ালপুল মেরামতির কাজই শুরু হয়নি। ডানলপে যেখানে আমাদের বসানো হয়েছে, সেখানে ব্যবসা হচ্ছে না। খুব অসুবিধা হচ্ছে।’’ চঞ্চলবাবু জানান, কেএমডিএ সেতু মেরামতির কাজ করবে। দু’-এক জন ইঞ্জিনিয়ার এসে ঘুরে গিয়েছেন, কিছু পরীক্ষাও করেছেন। কিন্তু মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগম, কেএমডিএ এবং দোকান-মালিকদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করার দাবি জানিয়েছি।

কেএমডিএ-র এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অরবিন্দ সেতুর মেরামতির প্রস্তুতি চলছে। পুরনো সেতু বলে খুব সতর্ক ভাবে এগোতে হচ্ছে।’’ ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই ব্যবসায়ীদের খুব অসুবিধা হচ্ছে বলে আমাকে জানিয়েছেন। নির্বাচন ছিল, তাই কিছু করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arabinda Setu Businessman Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE