চিংড়িঘাটা মেট্রো নিয়ে ফের সব পক্ষকে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রো লাইন জুড়তে চিংড়িঘাটায় কাজ আটকে রয়েছে। ওই রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে মেট্রোর কাজ করতে হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা ভেবে যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। এর আগেও কেন্দ্র, রাজ্য এবং নির্মাণকারী সংস্থাকে একসঙ্গে চিংড়িঘাটা নিয়ে আলোচনায় বসতে বলেছিল আদালত। এখনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে চিংড়িঘাটা মেট্রোর মামলার শুনানি ছিল। রাজ্যের বক্তব্য, ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিলে প্রচুর মানুষ সমস্যায় পড়বেন। আদালতের নির্দেশ, সব পক্ষকে বৈঠকে বসতে হবে এবং খোলা মনে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, একমাত্র কোভিড আবার ফেরত না এলে রাস্তায় গাড়ির চাপ কোনও দিনই কমবে না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা খোলা মনে আলোচনায় বসুন, সমাধান সূত্র বার করুন। কোনও এক সময় তো কাজ করতেই হবে, তখন কি যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে না? একটি প্রকল্পের কাজে অযথা দেরি না করে দ্রুত এর সমাধান করুন।”
আরও পড়ুন:
চিংড়িঘাটা মেট্রোর জট ছাড়াতে বুধবারই এক দফা আলোচনা হয়েছে কেন্দ্র, রাজ্য, নির্মাণকারী সংস্থা আরভিএনএল-সহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতিনিধিদের। আদালতের নির্দেশে ফের তাঁরা বৈঠকে বসবেন। সেই বৈঠকে থাকার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত।
নিউ গড়িয়া থেকে মেট্রোয় চেপে এখন বেলেঘাটা পর্যন্ত যাওয়া যায়। কিন্তু বিমানবন্দর পর্যন্ত পরিষেবা নেই। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই প্রকল্পের কাজ চিংড়িঘাটায় আটকে রয়েছে। গোটা প্রকল্প শেষ হলেও মাত্র ৩৬৬ মিটার অংশে কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। ফলে মেট্রো লাইনের সম্প্রসারণও আটকে। জনগণের স্বার্থের কথা ভেবে সব পক্ষকে আলোচনায় বসার নির্দেশ আগেও দিয়েছিল হাই কোর্ট। বৈঠকের পর নভেম্বর মাস থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পুলিশ ছাড়পত্র দেয়নি। ফের তা নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
চিংড়িঘাটা নিয়ে রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, শহরের অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা চিংড়িঘাটা মোড়। সেখানে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলে সাধারণ মানুষ প্রবল সমস্যায় পড়বেন। ওই এলাকায় তো বটেই, অন্য রাস্তাতেও যানজট হবে। এমনকি, অ্যাম্বুল্যান্সের যাতায়াতেও সমস্যা হবে। কিন্তু হাই কোর্ট ফের আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র বার করার নির্দেশ দিল।