আমরি হাসপাতালে ২০১১ সালে আগুনে ৯৪ জনের মৃত্যু ঘটনার কয়েক মাস আগেও সেখানে এক বার আগুন লাগে। সেই আগুন লাগার খবর দমকলকে জানানোর জন্য ওই হাসপাতালের এক কর্মীকে সাসপেন্ড করেন আমরি-কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এমন দাবি করল রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারেরর অভিযোগ, ২০০৭ সাল থেকে আমরি কর্তৃপক্ষ একাধিক বার দমকলের কাছে হলফনামা দিয়েছেন। তাতে তাঁরা জানিয়েছিলেন, অগ্নি নির্বাপণের সব ব্যবস্থা তাঁরা তো নেবেনই, পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে সব রকম দাহ্য পদার্থও সরিয়ে নেবেন। কিন্তু তা করা হয়নি।
হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় ওই অভিযোগ করে এ দিন জানান, দমকলের কাছে বার বার হলফনামা দিয়েও তাদের নির্দেশ যে কর্তৃপক্ষ মানেননি, তার সাক্ষ্য দিয়েছেন হাসপাতালেরই কর্মীরাই। পিপি-র আরও অভিযোগ, আগুন লেগেছে জেনে এক কর্মী মেন গেটে তালা লাগিয়ে চলে যান। আগে দমকলে খবর না দিয়ে নিজেরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
কোন প্রেক্ষিতে আদালতে এমন অভিযোগ রাজ্যের?
আমরি-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত হয়েছেন প্রবীণ চিকিৎসক মণি ছেত্রী। কলকাতা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন করেছে।
মণিবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ এনেছে, হাসপাতালে যে কোনও সময় বড় ধরনের আগুন লাগবে এবং তার জেরে মৃত্যু হবে, তা তিনি জানতেন। আগুন লেগে ৯৪ জনের মৃত্যুর দায় তিনি এড়াতে পারেন না।
পুলিশের আনা চার্জ থেকে তাঁকে মুক্তির আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর আদালতে মামলা করেছেন প্রবীণ ওই চিকিৎসক। সেই মামলার শুনানি ছিল এ দিন।
এর আগের শুনানিতে প্রবীণ আইনজীবী সমরাদিত্য পাল চিকিৎসক মণি ছেত্রীর পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি সওয়ালে বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের লাইনে আগুন আটকানো বা নিয়ন্ত্রণ বিকল হওয়ায় বাতানুকুল যন্ত্রের পাইপ দিয়ে ধোঁয়া ঢুকে যায় হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের ওয়ার্ডে। আগুন আটকানোর ব্যবস্থা বিকল হওয়ার দায় তাঁর মক্কেলের উপর বর্তায় না।
পিপি জানান, অভিযুক্ত চিকিৎসক দায় এড়াতে পারেন না। কারণ তিনি হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, হাসপাতালের লাইসেন্সও তাঁর নামে। তা ছাড়া হাসপাতালের প্রতিদিনের কাজকর্ম সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২০ এপ্রিল।