পথের দাবি: টেট ইন্টারভিউ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শিয়ালদহ থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ধর্মতলায়। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
প্রায় এক বছর হতে চলল, টেট পাশ করে বসে আছেন তাঁরা। তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও কোনও আইনি জটিলতা তৈরি হয়নি। স্বভাবতই ওই চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন, কেন ইন্টারভিউ নিয়ে তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করছে না সরকার? শূন্য পদ ঘোষণা করে দ্রুত ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে, এই দাবিতে মঙ্গলবার শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করল ‘২০২২ প্রাথমিক টেট পাশ ডিএলএড ঐক্য মঞ্চ’। মিছিলের পরে বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে স্মারকলিপি দিতে যান আন্দোলনকারীরা। যদিও মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি। তাঁরা বিকাশ ভবনের এক শিক্ষাকর্তাকে স্মারকলিপি দেন।
এক চাকরিপ্রার্থী পার্থজিৎ বণিক জানান, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর তাঁদের পরীক্ষা হয়েছিল। ফল বেরোয় ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। এর পর থেকে তাঁরা ইন্টারভিউয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন। তারই মধ্যে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর ফের আরও একটি টেট হয়ে গেল। কিন্তু তাঁদের নিয়োগ হল না এখনও।
এ দিনের মিছিলে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীকে গেঞ্জি পরে থালা বাজাতে বাজাতে যেতে দেখা যায়। এক জন চাকরিপ্রার্থী সেজেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক জন সেজেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং আর এক জন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, টেট পাশ করে কাউকে বসে থাকতে হবে না। পর্ষদ সভাপতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রতি বছর দু’বার করে নিয়োগ হবে। কিন্তু কেউই কথা রাখেননি। অন্য দিকে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরা বার বার দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেও মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেননি।
এ দিনের মিছিলে কলকাতার পাশাপাশি যোগ দেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের চাকরিপ্রার্থীরাও। পার্থজিৎ জানান, তাঁরা প্রায় দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থী টেট পাশ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা বিএড এবং ১৮ মাসের ডিএলএড প্রশিক্ষিত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁদের এই তালিকা থেকে বাদ পড়ার কথা। কিন্তু তার পরেও কত জন ইন্টারভিউয়ে বসার যোগ্য, সেটা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানাচ্ছে না বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের। তাঁদের বক্তব্য, এই বিষয়ে জানতে চেয়ে তাঁরা তথ্যের অধিকার আইনে মামলা পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু এখনও তার কোনও উত্তর পাননি।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘টেট নেওয়া এবং নিয়োগ, দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছরই আমাদের টেট নিতে হবে।’’ ২০২২ সালে টেট পাশ প্রার্থীদের এখনও ইন্টারভিউ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ এবং ২০১৭ সালে যাঁরা টেট পাশ করেছেন, তাঁদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি। তার আগে কী ভাবে ২০২২-এর টেটের ইন্টারভিউ নেওয়া সম্ভব?’’ বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ সম্পর্কে বলেন, ‘‘বঞ্চিত মানুষের লাইন দিনের পর দিন বাড়ছে। তাই আন্দোলন বাড়বে, বিক্ষোভ বাড়বে। আরও অনেক কিছু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy