প্রতীকী চিত্র।
এ যেন পুরো উলটপুরাণ!
গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগেছিল সাইকেলের। তাতে সাইকেল বা তার আরোহী, কারও কোনও আঘাত না লাগলেও গুরুতর ক্ষতি হল গাড়িটির। শুধু তা-ই নয়, ঘটনাপ্রবাহ গড়াল থানা পর্যন্ত। অভিযোগও দায়ের হল পুলিশে। তবে এ হেন ঘটনায় কী করণীয়, তা নিয়েই ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছে না পুলিশ। তারাও বলছে, সাইকেলের ধাক্কায় গাড়ির ক্ষতি হওয়ার ঘটনা সচরাচর নজরে আসে না!
পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে যাদবপুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি গাড়ি নিয়ে কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলার দিকে আসছিলেন। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের সিগন্যালে তাঁর গাড়িতে পিছন থেকে হঠাৎ একটি সাইকেল ধাক্কা মারে। সেটি চালাচ্ছিলেন এক দুধ বিক্রেতা। সাইকেলের ধাক্কায় তাঁর গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহম্মদ রায়হান চাঁদনি চকের বাসিন্দা। তিনি পেশায় দুধ বিক্রেতা। প্রতিদিন সাইকেলে কন্টেনার ঝুলিয়ে দোকানে দোকানে দুধ বিক্রি করতে বেরোন তিনি। সেই সাইকেলের সঙ্গেই ধাক্কা লাগে গাড়িটির।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরেই সেই দুধ বিক্রেতাকে থানায় ধরে আনেন গাড়িচালক ও তাঁর এক সঙ্গী। বৃদ্ধ দুধ বিক্রেতা পুলিশকে বলেন, ‘‘বাবু, আমার অনেক দুধ দেওয়া বাকি। সব দুধ নষ্ট হয়ে গেল। আজ কিছু রোজগার হবে না।’’ কিন্তু গাড়িচালকও তাঁকে ছাড়বেন না। বৌবাজার থানায় এই কাণ্ড দেখে অনেকেই তখন মুখ টিপে হাসছেন। কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। থানার অফিসারেরা দু’জনকেই বোঝানোর চেষ্টা করেন, বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নিতে। বৃদ্ধ সাইকেলচালক পুলিশকে বলেন, ‘‘আমার কোনও দোষ নেই বাবু। তদন্ত করে দেখুন। গাড়ি আচমকা ব্রেক কষতেই এই কাণ্ড ঘটেছে।’’
গাড়িচালক ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দাবি করলে বৃদ্ধ দুধ বিক্রেতা বলেন, ‘‘আমি দিন আনি, দিন খাই। টাকা দিতে পারব না।’’ যে রাস্তায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সাইকেল চালানো বারণ। তাই প্রশ্ন উঠেছে, দুধওয়ালা ওই রাস্তায় বিনা বাধায় সাইকেল চালাচ্ছিলেন কী করে? পুলিশ অবশ্য গাড়িচালকের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি জেনারেল ডায়েরি গ্রহণ করেছে। যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে দেখা গিয়েছে, সাইকেলচালকের কোনও দোষ ছিল না। গাড়িচালকের জন্যই ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy