বহিরাগতদের ঠেকাতে এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তৃপক্ষ। বুধবার এ কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ।
ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতে এর আগে সদর দরজায় রক্ষীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল রেজিস্ট্রার সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রত্যেক পড়ুয়া, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের গলায় সচিত্র পরিচয়পত্র ঝোলানোর পথেও হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বার নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করতে সিসিটিভি-র সাহায্য নিতে চান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত মে মাসেও অবশ্য সিসিটিভি বসানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। তখন তা বাস্তবায়িত না হলেও এ বার তা হবেই বলে আশ্বাস দেন উপাচার্য।
গত বছরের জুলাইতে ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ ওঠে বেশ কিছু বহিরাগতের বিরুদ্ধে। এর পরে কখনও রাজাবাজার, কখনও কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ। এমনকী, রাতের অন্ধকারে কলেজ স্ট্রিটের ক্যাম্পাসের ছাত্র সংসদের ঘরের দেওয়ালে কালি লাগিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকেই কড়া হাতে তার মোকাবিলা করতে শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। গত মে মাসে সুগত মারজিত উপাচার্য থাকার সময়েই ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু তার পরে কার্যত তা ধামাচাপা পড়ে যায়। এ বার ফের সেই উদ্যোগ নিতে শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ।
বুধবার উপাচার্য জানান, সল্টলেকের ক্যাম্পাসে ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়ে গিয়েছে আরও সাতটি ক্যাম্পাস। প্রতিটিতেই একটি দরজায় এবং কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের দু’টি দরজাতেই ক্যামেরা বসানো হবে। কলেজ স্ট্রিট ক্যম্পাসের ক্ষেত্রে গোটা বিষয়টির উপরে নজরদারি চালাবেন রেজিস্ট্রার। তাঁর ঘরে থাকা স্ক্রিনেই ফুটে উঠবে দু’টি দরজার চিত্র। তবে অন্যান্য ক্যাম্পাসের ক্ষেত্রে কোথা থেকে নজরদারি চলবে, তার সিদ্ধান্ত পরে হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা। এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। পরবর্তী সময়ে সুরঞ্জন দাস উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই ঘরের সামনের সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে দিয়েছিলেন। এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হওয়ায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের একাংশ জানায়, গত বছরের জুলাইতে শিক্ষকদের উপরে হামলার পরে সিন্ডিকেট হল এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর দাবি উঠেছিল। ওই সমস্ত দাবি নিয়ে অবশ্য এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই জানান এক কর্তা।
উপাচার্য আরও জানান, ডিসেম্বরে নাক-এর দল পরিদর্শনে আসবে বলে এ বছরের সমাবর্তন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিদর্শনের আগে কোনও ভাবেই ছাত্রভোট চান না কর্তৃপক্ষ। সে কারণে জানুয়ারি মাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।