ফাইল চিত্র।
হাসপাতালের অস্থি বিভাগে সোমবার সকালে অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল এক রোগীর। কিন্তু তার আগেই, রবিবার রাতে সেই রোগীর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার উত্তেজনা ছড়াল এম আর বাঙুর হাসপাতালে।
কোভিডের কারণে অন্য বিভাগের মতো ওই হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগেও অস্ত্রোপচার এত দিন বন্ধ ছিল। কোভিডের বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরে অন্যান্য বিভাগের অস্ত্রোপচার শুরু হয়ে যায়। এ দিন থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল অস্থি বিভাগের অস্ত্রোপচারও। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয় জগদীশ গঙ্গোপাধ্যায় (৬২) নামে ওই রোগীর।
পরিবার সূত্রের খবর, গত ১১ এপ্রিল দুর্ঘটনায় পা ভাঙে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা জগদীশবাবুর। তবে কর্মসূত্রে ঢাকুরিয়ায় থাকতেন তিনি। ওই দিন সাইকেলে ফেরার পথে একটি স্কুটার ধাক্কা মারলে তাঁর
দুই পা-ই ভেঙে যায়। চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। তাঁর পরিবারের দাবি, জগদীশবাবুর অস্ত্রোপচার হবে বলে সে সময়ে হাসপাতালের তরফে জানানো হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে তা করা হয়নি। মৃতের নাতি অতনু গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘কেন এক সপ্তাহ ধরে অস্ত্রোপচার না করে ফেলে রাখা হল, সেটাই আমাদের জানানো হয়নি। রবিবার অবধি দাদু ঠিক ছিলেন। তখনও পর্যন্ত তাঁকে শুধু ব্যথা কমানোর ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল। রবিবার রাতে হাসপাতাল থেকে ফোনে জানানো হয়, দাদু হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।’’
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিনই ওই প্রৌঢ়ের পায়ের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। এমনকি, করোনার পরে হাড়ের চিকিৎসা বিভাগের অস্ত্রোপচারও এ দিন থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল। আর জগদীশবাবুই ছিলেন প্রথম রোগী। কিন্তু তার আগেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি।
উল্লেখ্য, করোনা-কালে এম আর বাঙুর হাসপাতালটিকে সম্পূর্ণ রূপে কোভিডের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। সম্প্রতি কোভিডের পাশাপাশি অন্য রোগের চিকিৎসাও ফের চালু করা হয়েছে। হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর জানান, কোভিড-পরবর্তী সময়ে সোমবার থেকেই অস্থি বিভাগের অস্ত্রোপচার শুরু হওয়ার কথা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘আচমকাই ওই রোগী রবিবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। তা-ও আমরা রোগীর পরিবারকে বলেছি লিখিত অভিযোগ জানাতে। যে হেতু রোগী দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন, তাই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তাঁর দেহের ময়না-তদন্ত করা হবে।’’
কিন্তু ওই প্রৌঢ়ের পরিবারের তরফে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে জগদীশবাবুকে প্রথমে কেন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, রোগীর জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল না। তাই তাঁর অস্ত্রোপচারের যখন প্রয়োজন, তখনই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারই মধ্যে রোগী হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy