E-Paper

নকল করার প্রবণতা বাড়ছে, উদ্বিগ্ন অধ্যক্ষদের চিঠি অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে

নকল করার প্রবণতা বাড়ছে। এ বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ৫০টিরও বেশি কলেজের অধ্যক্ষ তাঁদের উদ্বেগের কথা লিখিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-কে জানিয়েছেন।

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৩
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

পরীক্ষার্থীদের মধ্যে নকল করার প্রবণতা বাড়ছে। এ বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ৫০টিরও বেশি কলেজের অধ্যক্ষ তাঁদের উদ্বেগের কথা লিখিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-কে জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, পরীক্ষার্থীর সংখ্যাধিক্য এবং নজরদারের অপ্রতুলতা সমস্যা বাড়াচ্ছে। প্রসঙ্গত, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখে লিখতে গিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে ধরা পড়েন এক পরীক্ষার্থী। বিষয়টি প্রশ্ন ফাঁস, না কি শুধুই প্রযুক্তির সাহায্যে টোকাটুকি— তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।

অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে অধ্যক্ষেরা, তাঁদের অন্যতম ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজের তিলক চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিলক বলেন, ‘‘আগে চিরকুটে বা শরীরে লিখে নকল করা হত, অথবা অন্য পরীক্ষার্থীর থেকে জেনে লেখা হত। এখন জুড়েছে প্রযুক্তির সাহায্যে টোকা।’’ তাঁর মতে, হাতেনাতে নকল ধরার বিষয়টি কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ, এই কাজে যত নজরদার প্রয়োজন, বিভিন্ন কারণে তার অভাব রয়েছে। তা ছাড়া, পরীক্ষার হলে দূরত্ব মেনে যত পরীক্ষার্থীকে বসানো যায়, তার থেকে বেশি পরীক্ষার্থী পাঠানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে মোবাইল ফোনের সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষার্থী বাইরে ফোন রেখে হলে ঢুকতে চান না। কারণ, বাইরে ফোন রেখে পরে পরীক্ষার্থীদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তাঁদের মোবাইল হারিয়ে গিয়েছে।

এই সমস্যা নিয়ে সরব হওয়া ওই অধ্যক্ষদের এক জন, কসবার নব বালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা অয়ন্তিকা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘নজরদার হিসাবে শিক্ষকদের সংখ্যা অপ্রতুল নয়। কিন্তু কলেজে কলেজে শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা সত্যিই কম। পরীক্ষা চলাকালীন তাঁরাও বড় ভূমিকা পালন করেন।’’ তাঁরও মত, যত পরীক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় দূরত্বে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষমতা কলেজগুলির আছে, তার থেকে বেশি পরীক্ষার্থীকে কখনও কখনও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক অভিজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘যদি দেখা যায়, সমাজে অসাধু উপায় অবলম্বন যাঁরা করেন, তাঁদের দাপট বাড়ছে, তা হলে তা অন্য ক্ষেত্রেও দেখা যাবে। অসাধু কাজকে সমাজ মান্যতা দিলে তা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়া আশ্চর্যের বিষয় নয়।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ছোট ক্লাসে অনেকেই দুষ্টুমি করে একে অন্যেরটা দেখে লেখে। কিন্তু সেই কাজ যখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তরে চলে আসে, তখন ধরা যায়, সেই পরীক্ষার্থীরা মনে করছেন, শর্ট কাট পথে জীবনে বড় হওয়া যায়। লেখাপড়ার দরকার নেই। আর এই কাজকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারছে আধুনিক প্রযুক্তি।’’ অভিজিতের মতে, অবশ্যই এই প্রবণতা বন্ধ করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের সঙ্গে অধ্যক্ষদের কথা হয়েছে বলে খবর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta University Student Cheating Examinations

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy