Advertisement
E-Paper

বিদ্যুত্ বিলের চেক ফেরত, অস্বস্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়

বিল না-মেটানোয় কিছু দিন আগে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে ফোনের কয়েকটি লাইন কেটে দিয়েছে বিএসএনএল। এ বার ওই ক্যাম্পাসেরই বিদ্যুতের বিল বাবদ দেওয়া তিন-তিনটি চেক ‘বাউন্স’ করেছে অর্থাৎ ফিরে এসেছে বলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাল সিইএসসি। বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন কর্তা জানাচ্ছেন, দেড়শো বছরের প্রাচীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৫

বিল না-মেটানোয় কিছু দিন আগে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে ফোনের কয়েকটি লাইন কেটে দিয়েছে বিএসএনএল। এ বার ওই ক্যাম্পাসেরই বিদ্যুতের বিল বাবদ দেওয়া তিন-তিনটি চেক ‘বাউন্স’ করেছে অর্থাৎ ফিরে এসেছে বলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানাল সিইএসসি। বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিভিন্ন কর্তা জানাচ্ছেন, দেড়শো বছরের প্রাচীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, সিইএসসি-কর্তৃপক্ষের তরফে বৃহস্পতিবার ফোন করে চেক ফিরে আসার কথা জানানো হয়। কেন এ ভাবে চেক বাউন্স করল, সেই ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়ে যায় তার পরেই। এর আগে বিলের টাকা না-পেয়ে বিএসএনএল বিজ্ঞান কলেজ ক্যাম্পাসের কয়েকটি টেলিফোন লাইন কেটে দেওয়ায় বেশ কয়েকটি ফ্যাক্স নম্বরও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বিদ্যুতের লাইনে কোপ হয়তো এখনও পড়েনি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ কী এমন হল যে, বিদ্যুৎ বা ফোনের টাকাও মেটানো যাচ্ছে না?

টাকার টানাটানি যতই থাক, বিদ্যুৎ বা ফোনের মতো জরুরি পরিষেবার খরচ না-জোগানোর মতো অবস্থা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়নি বলেই মনে করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শিবির। তারা এই পরিস্থিতির জন্য প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিশৃঙ্খলাকেই দায়ী করছে। বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা চলছে কয়েক মাস ধরে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে সাসপেন্ড হয়ে আছেন ফিনান্স বা অর্থ অফিসার। নিয়ম ভেঙে স্থায়ী আমানত খোলা এবং তার যথাযথ হিসেব দিতে না-পারার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর।

এই অবস্থায় অর্থ-অফিসারের অনুপস্থিতিতে পাওনাদারদের বকেয়া মেটানো নিয়ে জটিলতা চলছে। বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির বকেয়া বিল আটকে যাচ্ছে। তাতে প্রতিষ্ঠানকে অস্বস্তিতে পড়তে তো হচ্ছেই। কিন্তু বিএসএনএলের প্রাপ্য না-মেটানোয় বা সিইএসসি-র মতো সংস্থাকে দেওয়া চেকও ফিরে আসায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি যে-ভাবে চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হল, তার কোনও নজির নেই বলেই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ নষ্টের এমন ঘটনার জন্য সহ-উপাচার্য (অর্থ) সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অতীতের অনিয়মকে দুষছেন। তিনিই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত কর্ত্রী। সোনালীদেবী জানান, অতীতে যে-অনিয়ম হয়েছে, তারই জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়গুলিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে তাঁরা উদ্যোগী হয়েছেন বলে দাবি সহ-উপাচার্য (অর্থ)-এর। সেই কাজ শুরু হয়েছে। তাই এখন এ ধরনের কিছু গোলমাল হলেও ভবিষ্যতে আর এমনটা হবে না বলেই আশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই কর্ত্রী।

বিদ্যুতের বিল বাবদ দেওয়া চেক ফেরত আসার বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে এ দিনই উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে ই-মেল পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখার সচিব অমিত রায়। তিনি অবশ্য বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। আর উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘এমনটা হওয়া উচিত নয়। ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না-হয়, সেটাই চাইব।’’

চেক বাউন্স করার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে জানালেও সিইএসসি সংবাদমাধ্যমের কাছে এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি। আর ফোনের লাইনে কোপ নিয়ে বিএসএনএলের তরফে জানানো হয়েছে, বকেয়া না-মেটালে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে এমনিতেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিল মিটিয়ে দেওয়ার পরেই আবার তা চালু হয়ে যাবে।

Calcutta University electricity bill CESC BSNL Suranjan Das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy