Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Jadavpur University Student Death

র‌্যাগিং নিয়ে কেন অমান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ? যাদবপুরকে কারণ দর্শাতে বলল শিশু সুরক্ষা কমিশন

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করল পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কেন মানা হয়নি? জবাব তলব করা হয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।

Child Rights Commission has issued showcause notice to Jadavpur University.

(বাঁ দিকে) পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৩ ১৭:১৩
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে র‌্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি অমান্য করার কারণ দর্শাতে বলল পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ় করা হয়েছে। বিবৃতি জারি করে সে কথা জানিয়েছে কমিশন। অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট র‌্যাগিং সংক্রান্ত যে নির্দেশ দিয়েছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অমান্য করা হয়েছে। র‌্যাগিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশিকাও মানা হয়নি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধে র‌্যাগিং চলেছে। প্রথম বর্ষের নতুন ছাত্রছাত্রীরা র‌্যাগিংয়ের কারণে আতঙ্কিত। কেন নিয়ম মানা হল না? দু’দিনের মধ্যে যাদবপুরকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার বিবৃতি দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, যে ছাত্রছাত্রীরা র‌্যাগিং-বিরোধী নিয়মকানুন এবং নির্দেশিকা মানেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার ফলেই প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মর্মান্তিক এই মৃত্যু। কেন কোনও পদক্ষেপ করলেন না কর্তৃপক্ষ? বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এর আগে রবিবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল পরিদর্শন করেছেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছেন। রবিবার যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নদিয়ার বাড়িতেও গিয়েছিলেন কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তার পর সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়কে র‌্যাগিং সংক্রান্ত বিষয়ে শো-কজ করা হল।

রবিবারই মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে অনন্যা প্রশ্ন তুলেছিলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা নেই কেন? সেটা কি অন্য কোনও গ্রহ? কেন আর পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়ম মেনে চলা হয়, যাদবপুরে তা হবে না? পাশাপাশি, মৃত ছাত্রের বয়স ১৮ না হওয়ায় তাঁর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধও করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, ছাত্রের উপর যৌন হেনস্থা হয়ে থাকতে পারে। ফলে এটি পকসো আইনের অধীনে পড়ে। সেই আইন অনুযায়ী বিচার চেয়েছিলেন অনন্যা।

রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের তরফে যাদবপুরের ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি জানতে চেয়ে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোসের কাছেও রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কমিশন রিপোর্ট চেয়ে চিঠি দিয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকেও।

ইউজিসি নির্দিষ্ট র‌্যাগিং-বিরোধী নিয়মাবলি যাদবপুর-সহ ইউজিসি অনুমোদিত কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই মানা হয় না, এই মর্মে সোমবারেই কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আবার একইসঙ্গে যাদবপুরের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছে।

(পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী রবিবার তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টে যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নাম না-লিখতে অনুরোধ করেছেন। এই মৃত্যুমামলা অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর যৌন নির্যাতন বিরোধী ‘পকসো’ আইনে হওয়া উচিত বলেও তাঁর অভিমত। কমিশনের উপদেষ্টার অনুরোধ মেনে এর পর আনন্দবাজার অনলাইন মৃত ছাত্রের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE