Advertisement
E-Paper

তুতু-ভুতুর ধাঁচে বঙ্গজীবনে রুশ গল্প

যেখানেই যান আন্নার ঝুলিতে শিশুদের জন্য এত চকলেট আর রুশ ভাষায় লেখা জাদু কাগজে সুন্দর সব শুভেচ্ছাবার্তা।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৪১
নতুন: বই হাতে আন্না গনচারোভা। রবিবার, বইমেলায়। (ডান দিকে) ধীরেন বলের তুতু-ভুতুর প্রচ্ছদ। নিজস্ব চিত্র

নতুন: বই হাতে আন্না গনচারোভা। রবিবার, বইমেলায়। (ডান দিকে) ধীরেন বলের তুতু-ভুতুর প্রচ্ছদ। নিজস্ব চিত্র

রুশ সুরভি কি ফিরতে চলেছে?

ঠিক যেন ধীরেন বলের অবিনশ্বর তুতু আর ভুতু। ছবিতে এনিয়া আর এলিয়াদের সাজগোজ দেখলে তুতু-ভুতুকে মনে পড়বেই।

তবে বেড়াল ও কুকুর নয়, ওরা হল রাকুন। বেড়ালের থেকে বড়, অনেকটা যেন ভালুকের আদল। শীতের দেশের আবাসিক রাকুনকে আমাদের ছোটদের চেনাতে ওই ‘মিনি ভালুক’ ধাঁচটাই পছন্দ করেছিলেন গোর্কি সদনের রুশ বিশারদেরা। তাঁদের হাত ধরেই রাশিয়ায় রীতিমতো জনপ্রিয় রাকুন ভাইবোন এনিয়া আর এলিয়ারা এ বইমেলায় বাংলায় আত্মপ্রকাশ করেছে। অনুবাদক মাধবী ভট্টাচার্য, গৌতম ঘোষেরা রাকুনদের ভল্লু নাম দিয়েছেন। এনিয়া আর এলিয়ার ‘মা’ রুশ শিশুসাহিত্যিক আন্না গনচারোভাও দিন তিনেক হুল্লোড় করে বইমেলার ধুলোয় বা কলকাতার নানা মুলুকে ঘুরে গেলেন।

যেখানেই যান আন্নার ঝুলিতে শিশুদের জন্য এত চকলেট আর রুশ ভাষায় লেখা জাদু কাগজে সুন্দর সব শুভেচ্ছাবার্তা। সুযোগ পেলেই মাটিতে হাঁটু মুড়ে বসেও পড়েন তাঁর গল্পের ঝুলি নিয়ে। বাঙালি মননে ৬০ বছরেও অমলিন তুতু-ভুতুর মতো এনিয়া আর এলিয়ার গল্পগুলোও ছোটদের ভালমানুষ হতে বা পৃথিবীর সব ‘চ্যাঁওম্যাও-হাঁসুখোকাদের’ ভালবাসতে শেখায়। “এ ছাড়া যে উপায় নেই। পৃথিবী জুড়ে ছোটরা অনেক জায়গাতেই কষ্টে আছে। বছর কুড়ি আগে আমাদের রাশিয়াও খারাপ পরিস্থিতিতে ছিল। লেখালেখি ঠিকঠাক হয়ে উঠছিল না।”— বলছিলেন আন্না। ইতিমধ্যে নীল শাড়িতে সেজে রাজডাঙার একটি কাফেতে অনামী স্কুলের খুদেদের তাঁর গল্প শুনিয়ে এসেছেন আন্না। তিনি যেখানেই যান, এক ধরনের ইতিবাচক বার্তা গমগম করে। রুশ শিশুসাহিত্যিকের বার্তা, ছোটদের জন্য অন্তত একটা ভরসার পৃথিবীর ছবি আমি আঁকতে চাই। তা সে আমায় যে যাই ভাবুন!

বাংলার আবহমান শৈশবের অঙ্গাঙ্গী হলদে-ঝুঁটি মোরগ, পাঁশুটে শেয়াল, ভাইবোন ইভানুশকা-আলিওনুশকাদের সুরভিময় ‘রুশদেশের উপকথা’ কিংবা আর্কাদি গাইদারের ‘নীল পেয়ালা’,— এই বইমেলাতেই আবার পুরনো চেহারায় প্রকাশ হয়েছে। রাশিয়ার ‘ইনস্টিটিউট অব লিটারারি ট্রান্সলেশন’ এ বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। রুশ সাহিত্যের ৬-৭টি নতুন বইও এই বইমেলায় কলকাতার বিভিন্ন প্রকাশকেরা রুশ কর্তৃপক্ষের অনুমতিতেই প্রকাশ করেছেন।

বইমেলার উদ্বোধনী আসরের অতিথি রুশ মন্ত্রী ভ্লাদিমির গ্রিগোরিয়েভের কথায়, ‘‘কলকাতার মতো চমৎকার বইমেলায় আমরা এর পরেও ব্যবসায় জোর দিতে চাই। আর পুরনো ভাল বই সোভিয়েট জমানার হলেও ছাপতে কোনও ছুতমার্গ নেই আমাদের।’’ বইমেলা জুড়েই আরও অনেক বাংলা প্রকাশকের সঙ্গে রুশ কর্তাদের বই প্রকাশ নিয়ে নানা বৈঠক হয়েছে। খুব ভাল গঠনমূলক কথা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন, মস্কোয় কর্মরত বইমেলার রুশ প্যাভিলিয়নের মুখপাত্র দেবস্মিতা মৌলিক।

সেই বেহালা বাজানো লোকটার মতো ধ্রুপদী রুশ সৌরভ ফিরতেও পারে বাঙালি জীবনে।

Gorky Sadan Comics Russia 2020 Kolkata International Book Fair
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy