চলছে রান্নাবান্না। রবিবার, নিউ আলিপুর থানা চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
নিউ আলিপুর থানার চত্বরে রবিবার যেন যজ্ঞিবাড়ির ব্যস্ততা। হাঁড়ি ভরে ভরে ফ্রায়েড রাইস নামছে, তৈরি হচ্ছে মুরগির মাংসের চিনা পদ। রান্নার গন্ধে আশপাশের এলাকা ম-ম করছে! থরে-থরে সাজানো ঠান্ডা পানীয় ও চকলেট।
রবিবার বাঙালি বাড়িতে পাঁঠার ঝোলের গন্ধ বা বর্ষাকালে ইলিশের সুবাস মেলে বটে! কিন্তু তা বলে থানায় এমন আয়োজন? খোঁজ নিতেই জানা গেল, সেঞ্চুরির উদ্যাপনে এমন আয়োজন।
কীসের সেঞ্চুরি?
পুলিশ সূত্রের খবর, নিউ আলিপুর থানা এলাকায় কলকাতা পুরসভার ৮১, ১১৮ এবং ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ১১টি বস্তি এলাকা রয়েছে। লকডাউন শুরু হতেই গোটা শহরের মতো ওই পাড়াগুলিতেও খাবার বিলি করা শুরু হয়েছিল। থানা চত্বরে অস্থায়ী রান্নাঘর তৈরি করে রোজ বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে কোনও দিন ডিমভাত, কোনও দিন খিচুড়ি-অমলেট প্লাস্টিকের কৌটো ভরে পৌঁছে যেত পাড়ায় পাড়ায়। পিপিই পরা পুলিশকর্মীরা দূরত্ব-বিধি মেনে দ্রুত সেই খাবার বিলি করে ফিরে আসতেন থানায়। অন্য থানা এলাকায় ধীরে ধীরে খাবার বিলি বন্ধ হলেও নিউ আলিপুর থানা সেই কাজ চালিয়ে গিয়েছে। পাশে পেয়েছে বহু সাধারণ মানুষ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। আলাদা ভাবে ত্রাণ বিলি না করে সবাই থানার মাধ্যমেই এই কাজে শামিল হয়েছেন।
এ দিন ছিল সেই প্রকল্পের শততম দিন। তাই থানার ওসি অমিতশঙ্কর মুখোপাধ্যায় ঠিক করেছিলেন, একটু অন্য রকম খাবার খাওয়ানো হোক। তাতে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষগুলির মুখে একটু হাসিও ফুটবে। খাবারের পাশাপাশি বড়দের জন্য ঠান্ডা পানীয় ও ছোটদের জন্য চকলেটের ব্যবস্থাও ছিল।
অনেকেই বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশ পথে নেমে প্রচুর কাজ করেছে। বহু পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, বহু থানার কাজকর্ম কার্যত শিকেয় ওঠার জোগাড় হয়েছিল। তা-ও হাল ছাড়েননি উর্দিধারীরা। তবে নিউ আলিপুর থানার কর্মীরা বলছেন, ‘‘করোনা এখনও আমাদের থানায় হামলা করতে পারেনি।’’ তাঁদের দাবি, সাবধানতার সঙ্গে একেবারে আপস না-করার ফলেই এখনও তাঁরা প্রত্যেকে সুস্থ রয়েছেন। তাঁরা জানান, তাঁদের কাছে আরও সাত-দশ দিনের মতো খাবার সরবরাহ করার জিনিসপত্র মজুত রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy