Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পথে-পাতালে ভুগল শহর

সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল অ্যাপ-ক্যাব চালকদের আন্দোলন। যার জেরে রাস্তায় ক্যাবের সংখ্যা ছিল কম। বিকেলে ময়দান ও রবীন্দ্র সদনের মাঝে রেকে আগুন লাগায় বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো।

দুর্ভোগ: বন্ধ মেট্রো। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে বাস-ট্যাক্সির অপেক্ষায় যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার, ময়দান স্টেশনের বাইরে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

দুর্ভোগ: বন্ধ মেট্রো। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে বাস-ট্যাক্সির অপেক্ষায় যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার, ময়দান স্টেশনের বাইরে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৭
Share: Save:

সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল অ্যাপ-ক্যাব চালকদের আন্দোলন। যার জেরে রাস্তায় ক্যাবের সংখ্যা ছিল কম। বিকেলে ময়দান ও রবীন্দ্র সদনের মাঝে রেকে আগুন লাগায় বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই দুই জোড়া ফলায় ভোগান্তিতে পড়লেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। সেই দুর্ভোগ আরও বাড়ে সন্ধ্যার পরে, মা উড়ালপুলে একটি গাড়ি উল্টে যাওয়ায়। যার জেরে বন্ধ হয়ে যায় উড়ালপুলের বাইপাসমুখী রাস্তা। পুলিশ জানায়, ওই সময়ে দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার একটি বড় অংশে পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, যান চলাচল কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। যানজটের জেরে এক্সাইড থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ির সারি। যার জের চলে রাত পর্যন্ত।

লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন দক্ষিণ কলকাতার রুবি মোড়ের কাছে পরিবহণ ভবনে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে অ্যাপ-ক্যাব চালক ও মালিকদের বৈঠক ছিল। সেই কারণে এ দিন রাস্তায় অ্যাপ-ক্যাবের সংখ্যা ছিল অন্য দিনের তুলনায় অনেক কম। যে ক’টি গাড়ি রাস্তায় ছিল, তা-ও দুপুরের পর থেকে উধাও হয়ে যায় চালকদের বাধায়। অভিযোগ, পরিবহণ ভবনে ওই বৈঠক নিষ্ফলা হতেই রুবি মোড়ের কাছে অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা রাস্তায় নেমে অন্য অ্যাপ-ক্যাব দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের জোর করে নামিয়ে দেন। ছাড়া পাননি রোগীরাও।

পুলিশ জানিয়েছে, অ্যাপ-ক্যাব না পেয়ে এ দিন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বহু শহরবাসীকে। সেই ভোগান্তির সঙ্গেই যুক্ত হয় বিকেলে মেট্রোয় বিভ্রাট। ময়দান ও রবীন্দ্র সদনের মাঝামাঝি জায়গার ওই ঘটনায় কবি সুভাষ থেকে দমদম পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো চলাচল। অফিস শেষে বাড়ি ফেরার সময়ে প্রবল সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। মেট্রো কখন আবার চালু হবে, তার অপেক্ষায় না থেকে ভিড়ে ঠাসা স্টেশন থেকে রাস্তায় উঠে আসেন তাঁরা অনেকেই। সে সময়ে রাস্তায় থাকা অফিসফেরত যাত্রীদের সঙ্গে মেট্রোর যাত্রীরা যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে। আশুতোষ মুখার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে থাকা মেট্রো স্টেশনগুলির বাইরে তখন পা রাখা দায় মানুষের ভিড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা নিজেদের বাস চালিয়ে যাত্রীদের অনেককে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুন: আতঙ্ক-যানে এক বিকেল, মেট্রোর বন্ধ কামরায় অসহায় যাত্রীদের হুড়োহুড়ি

অ্যাপ-ক্যাব কম থাকায় দুর্ভোগে পড়লেও মেট্রো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। ভিড়ের জেরে বিকেলের পরে দক্ষিণ, পূর্ব ও মধ্য কলকাতার অনেক রাস্তাতেই দেখা দেয় যানজট। লালবাজার জানিয়েছে, জওহরলাল নেহরু রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির যানজটে আটকে পড়ে। পরমা উড়ালপুল, এ জে সি বসু রোড উড়ালপুল-সহ দক্ষিণ কলকাতার এক্সাইড মোড় পর্যন্ত গাড়ির গতি ছিল শ্লথ। বেশির ভাগ রাস্তাতেই গাড়ির লম্বা সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

পুলিশ জানায়, অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে যায় যে, সন্ধ্যা সাতটার পরে রাসবিহারী মোড় থেকে এক্সাইড মোড়ের দিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময়ে সমস্ত গাড়িকে ঘুরিয়ে দেওয়া হতে থাকে দেশপ্রিয় পার্কের দিকে। একই অবস্থা হয় এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলের। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই অবস্থার মধ্যে পরমা উড়ালপুলে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে একটি গাড়ি। তার জন্য বন্ধ হয়ে যায় উড়ালপুলের বাইপাসমুখী রাস্তা। তাতে পার্ক সার্কাস মোড় থেকে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি পর্যন্ত গাড়ির যানজট তৈরি হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

App Cab Vandalism Kolkata Metro Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE