Advertisement
০২ মে ২০২৪
Durga Puja 2023

কোথাও মণ্ডপের সাজ পরিবেশবান্ধব ঠোঙায়, কোথাও বা পুরনো প্লাস্টিকেই 

উত্তর কলকাতার তেলেঙ্গাবাগানের মণ্ডপ জুড়ে যেমন দেখা যাচ্ছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা। তাদের এ বারের পুজোর থিমও বাছা হয়েছে সে কথা মাথায় রেখে।

An image of

সচেতন: পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দিয়ে কাগজের ঠোঙায় সেজেছে উত্তর কলকাতার একটি পুজো।  ছবি: সুমন বল্লভ।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৩৮
Share: Save:

কোথাও পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিতে মণ্ডপ সাজছে কাগজের ঠোঙায়। কোথাও আবার মণ্ডপসজ্জায় দেদার ব্যবহৃত হচ্ছে প্লাস্টিক, থার্মোকলের উপকরণ। শহরের বড় পুজোগুলির একটি বড় অংশ মণ্ডপ তৈরিতে প্লাস্টিকের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকলেও অপেক্ষাকৃত কম বাজেটের পুজোগুলির অবাধ প্লাস্টিকের ব্যবহারের ছবি কার্যত ভয় ধরাচ্ছে। যা পুজোর উদ্যোক্তাদের ভূমিকা নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলছে, তেমনই প্রশ্ন উঠছে নজরদারি নিয়েও।

উত্তর কলকাতার তেলেঙ্গাবাগানের মণ্ডপ জুড়ে যেমন দেখা যাচ্ছে পরিবেশ
সচেতনতার বার্তা। তাদের এ বারের পুজোর থিমও বাছা হয়েছে সে কথা মাথায় রেখে। সচেতনতার বার্তা দিতে প্লাস্টিকের ব্যাগের বিকল্প হিসাবে কয়েক হাজার কাগজের ঠোঙা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মণ্ডপ। বিভিন্ন আকৃতির কাগজের ঠোঙা দিয়ে মণ্ডপের অন্দরমহলে তৈরি করা হচ্ছে নানা অবয়ব। এই থিমের পিছনে গত কয়েক বছরে পরিবেশের বিপুল পরিবর্তনের ভাবনা কাজ করেছে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। পরিবেশ নিয়ে বার্তা দিতে এই ভাবনা বলেই জানাচ্ছেন শিল্পী গোপাল পোদ্দারও।

তবে, এর উল্টো ছবিও রয়েছে। কোথাও মণ্ডপ তৈরিতে দেদার প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে, কোথাও মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে থার্মোকল বা প্লাস্টিকের উপকরণ কেটে। উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা সর্বজনীনের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে একটি মন্দিরের আদলে। সেই মন্দিরের রূপ দিতে দেদার থার্মোকলের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয়েছে প্লাস্টিকও। যদিও এই পুজোর সাধারণ সম্পাদক শমীককুমার সাহা বললেন, ‘‘থার্মোকল যতটা কম ব্যবহার করা যায়, সেই চেষ্টাই করেছি। কিছু ক্ষেত্রে আমরা এর ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছি। তবে এমন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থাকে।’’ পরিবেশের কথা মাথায় রাখলেও কিছু ক্ষেত্রে যে প্লাস্টিকের ব্যবহার করতেই হচ্ছে, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন দক্ষিণের সুরুচি সঙ্ঘের পুজোর উদ্যোক্তারাও। তবে, পুজোর শেষে মণ্ডপে ব্যবহৃত ওই প্লাস্টিকের জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে বলেও দাবি করছেন তাঁরা। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কিংশুক মিত্র বলছেন, ‘‘মূল মণ্ডপে কোনও বারই প্লাস্টিক বা পরিবেশ দূষণকারী কিছু ব্যবহার করা হয় না। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকলে সেগুলি পুজোর পরে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে নষ্ট করে দেওয়া হয়।’’ অনিয়মের একাধিক ছবির দেখা মিলেছে শহরের অপেক্ষাকৃত কম বাজেটের একাধিক পুজোয়। বেলেঘাটার একটি মণ্ডপের ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, দেদার ছড়িয়ে থার্মোকল। একই ছবি পর্ণশ্রীর একটি মণ্ডপেও।

মণ্ডপে প্লাস্টিক বা থার্মোকলের মতো পরিবেশ দূষণকারী জিনিসের ব্যবহার কমাতে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর তরফে গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চলছে বলে জানাচ্ছেন সংগঠনের কর্তারা। এমনকি, পুজোকর্তাদের সঙ্গে ফোরামের বৈঠকেও এই বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘প্রতি বছর বৈঠকে উদ্যোক্তাদের পরিবেশবান্ধব জিনিস ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে অনুরোধ করি। অধিকাংশ পুজো কমিটি সে দিকে খেয়ালও রাখে। কিন্তু কিছু বিধিভঙ্গ যে হয় না, তা অস্বীকার করব না। আসলে সব পুজো কমিটির পক্ষে তো বিকল্প জিনিসগুলি ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE