Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুকে চলল নারদ-নারদ

মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর ঘটনায় বন্ধু-অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফেসবুকে ‘জাস্টিস ফর সোনিকা’ বনাম ‘ভয়েস ফর বিক্রম’ নামে দুই গ্রুপের মধ্যে যুদ্ধ বেধে গিয়েছে। সেই লড়াইয়ের জেরে শুক্রবার দিনভর একটি গ্রুপে চলল বিজয়ের উল্লাস তো অন্য গ্রুপে সংবাদমাধ্যম আর সাংবাদিকদের যথেচ্ছ আক্রমণ।

বিচার। থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে (বাঁ দিকে)। আদালতে বিক্রম। নিজস্ব চিত্র

বিচার। থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে (বাঁ দিকে)। আদালতে বিক্রম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০২:১১
Share: Save:

নরম গদি নেই! এসি-র আরাম নেই! শ্রীঘরের মেঝেতে শুয়ে নায়কের ঘুম আসবে তো?— চিন্তায় পড়ে গিয়েছে এক পক্ষ। অন্য পক্ষের আবার সাফ কথা, নায়কের ঘুম উড়ে যাক, সেটাই তো চেয়েছিলেন তাঁরা! এ বার নিশ্চিন্তে ঘুমোনো যাবে।

যুদ্ধ চলছে!

ঢাল-তরোয়াল না থাকলেও আক্রমণের ধারে রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে সোশ্যাল মি়ডিয়া!

মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর ঘটনায় বন্ধু-অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ফেসবুকে ‘জাস্টিস ফর সোনিকা’ বনাম ‘ভয়েস ফর বিক্রম’ নামে দুই গ্রুপের মধ্যে যুদ্ধ বেধে গিয়েছে। সেই লড়াইয়ের জেরে শুক্রবার দিনভর একটি গ্রুপে চলল বিজয়ের উল্লাস তো অন্য গ্রুপে সংবাদমাধ্যম আর সাংবাদিকদের যথেচ্ছ আক্রমণ।

গত ২৯ এপ্রিল ভোরে পথ দুর্ঘটনায় সোনিকার মৃত্যুর পরে তাঁর বন্ধুরা ফেসবুকে ‘জাস্টিস ফর সোনিকা’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। সেখানে সোনিকার স্মৃতিচারণের পাশাপাশি এই ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তির দাবি তোলা হয়। এর দিন কয়েক পরে বিক্রমের অনুরাগী ও বন্ধুরা ‘ভয়েস ফর বিক্রম’ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। যুদ্ধের সেটাই শুরু। এ দিন অবশ্য সেই দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছয়।

সোনিকার বন্ধুরা স্পষ্টই জানিয়েছেন, এটা তাঁদের খুশির দিন। ‘স্টেটাস আপডেট’ করে তাঁরা জানান, বিক্রমের গ্রেফতারির দিনটা তাঁরা রীতিমতো উদ্‌যাপন করবেন। যাঁরা বিক্রমকে নির্দোষ বলে দাবি করতেন, তাঁদের মঙ্গল কামনা করে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি সোনিকার বন্ধুরা। অবশেষে তাঁদের বন্ধু ন্যায় বিচার পাবেন বলেই তাঁরা আশা করছেন। সুকন্যা দাশগুপ্ত নামে এক জন লিখেছেন, ‘‘পালিয়ে যাওয়া যায় না। ন্যায়ের বিচার এখনও হয়।’’ তবে তারই মধ্যে কারও কারও আশঙ্কা, প্রভাবশালী তত্ত্ব দেখিয়ে আবার শাস্তি মকুব হবে না তো? যেমন, তোড়া বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক জন গ্রেফতারির খবর শেয়ার করার পাশাপাশি কমেন্টে লেখেন, ‘‘এত দিন পরে গ্রেফতার হল, জেল কি খাটবে?’’

‘ভয়েস ফর বিক্রম’ গ্রুপে অবশ্য দিনভরই আক্রমণ। বিক্রমের কয়েক জন বন্ধু ও ভক্ত দাবি করেন, নায়ককে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে প্রভাবিত করা হয়েছে, বাধ্য করা হয়েছে। রাস্তায় নেমে এই গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানানোর কথাও বলা হয় ওই গ্রুপে। অন্য গ্রুপের বেশ কয়েক জন সদস্যের ছবি দিয়ে বিক্রমের অনুরাগীরা লেখেন, ‘‘জঘন্য মানসিকতা। রুচিহীন কয়েক জন কাদা ছোড়ার চেষ্টা করছেন।’’ অনেকে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘‘জাস্টিস ফর সোনিকা গ্রুপের সদস্যেরা যেন গোয়েন্দা। কে কতটা মদ খেয়েছে, কোন রিপোর্টে কী লেখা হয়েছে, সব খবর রয়েছে ওদের কাছে।’’ তাঁদের প্রশ্ন, এই গ্রেফতারির কি আদৌ কোনও প্রয়োজন ছিল? এ বিষয়ে বিভিন্ন মামলার উদাহরণ টেনে তাঁরা আলোচনাও করেন।

এর পাল্টা কমেন্ট লিখতেও পিছপা হয়নি সোনিকার বন্ধুরা। সেই সব পোস্ট তুলে ধরে সোনিকার বন্ধুরা গ্রুপে লেখেন, ‘‘টাকা খরচ করে আইনজীবী রাখার দরকার নেই। অনুরাগীদের আদালতে পাঠালেই সমস্যা মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE