Advertisement
E-Paper

মেধার প্রতি সুবিচার হবে তো? মূল্যায়ন নিয়ে সংশয়

মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষক সমিতিগুলিও নানা মতামত দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ০৫:৫৫

ফাইল চিত্র

অবশেষে শুক্রবার মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রকাশ করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। যা নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গেল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শিক্ষক এবং অভিভাবকদের একাংশের অবশ্য প্রশ্ন, এই পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হলে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের প্রতি সুবিচার করা যাবে তো?

হিন্দু স্কুলের কয়েক জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বক্তব্য, গত ১৮ মাস ধরে পরীক্ষার যে প্রস্তুতি তারা নিয়েছিল, তার কোনও মূল্যায়নই কার্যত হবে না এই পদ্ধতিতে। আবার উচ্চ মাধ্যমিকের কয়েক জন পরীক্ষার্থীর মতে, একাদশ শ্রেণির নম্বরে ৬০ শতাংশ ‘ওয়েটেজ’ ধরা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু দ্বাদশের তুলনায় অনেকেরই একাদশের প্রস্তুতি ততটা ভাল থাকে না। ফলে, যে পদ্ধতিতে তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাবা তাপস সেন বললেন, “এই মূল্যায়নের মার্কশিট নিয়ে ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারবে তো? এত দিন ধরে দ্বাদশের যে পড়াশোনা করল, সেটা কার্যত কোনও কাজেই এল না।”

মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষক সমিতিগুলিও নানা মতামত দিয়েছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু মনে করেন, “মাধ্যমিকের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে নিম্ন ও মধ্য মেধার পরীক্ষার্থীরা লাভবান হবে, কিন্তু উচ্চ মেধার শিক্ষার্থীদের ফলাফল সার্বিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের মতে, “নবমের সিলেবাস দশমের তুলনায় অনেকটাই কঠিন হওয়ায় নবমের বার্ষিক পরীক্ষায় নম্বর কম ওঠে। পাশাপাশি, অন্যান্য বার ওই নম্বরের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষার সম্পর্ক না-থাকায় অনেক ছাত্রছাত্রীই সেই পরীক্ষা ততটা গুরুত্ব সহকারে দেয় না। ফলে, ওই নম্বরের উপরে ভিত্তি করে মাধ্যমিকের মূল্যায়ন করা হলে প্রকৃত মূল্যায়ন হবে না। একই কথা একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।” ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, “একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ফলাফল এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ফলাফল তুলনা করলে দেখা যায়, সাধারণ ভাবে দ্বাদশ শ্রেণির ফলাফল তুলনায় অনেক ভাল হয়। সে ক্ষেত্রে মেধাবী পড়ুয়ারা তো বটেই, এমনকি, সাধারণ পড়ুয়ারাও একাদশে যে নম্বর পায়, তাতে তাদের পক্ষে পরবর্তী কালে মুশকিল হয়ে যাবে।”

‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বললেন, “মূল্যায়নের এই পদ্ধতিতে মেধার প্রতি সুবিচার করা হবে না। ছাত্রছাত্রীরা অকৃতকার্য হয়তো খুব কম হবে, কিন্তু একাদশ শ্রেণিতে এবং কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।”

তবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কিন্তু আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও পরীক্ষার্থীর যদি মূল্যায়ন পছন্দ না হয়, তা হলে করোনা পরিস্থিতি কেটে গেলে সে বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষার মূল্যায়নই চূড়ান্ত বলে ধরা হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, “পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের যে পরীক্ষায় বসার সুযোগ থাকছে, সেই বিষয়টিকে আমরা সমর্থন করি। স্কুলের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফল প্রকাশ করা হোক।”

Higher Secondary Madhyamik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy